লঘুচাপের কারণে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত ও নদীবন্দরে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বরগুনায় পায়রা, বলেশ্বর, খকদোন ও বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারি বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারে তলিয়ে গেছে জেলার তিনটি ফেরিঘাট, বরগুনা পৌর শহরসহ উপকূলীয় এলাকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শনিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
পৌর এলাকার বাসিন্দারা জানান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরের বসতি জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।
পুরাঘাটা-আমতলী রুটের বাসচালক মামুন মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার রাতের জোয়ারে ঘাট তলিয়ে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার দুপুরে জোয়ারে আবারও প্লাবিত হয়ে ২ ঘণ্টা ফেরি বন্ধ থাকে।
বরগুনা পৌর শহরের চরকলোনি, কলেজ রোড, স্টেডিয়াম এলাকাসহ পৌর শহরের বাজারসহ ফার্মেসি পট্টি, কসমেটিকস পট্টি ও গার্মেন্টস পট্টির রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে।
শহরের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘খাকদোন নদীর পানি বেড়ে শহরের রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। এতে যানবাহন ও পথচারী চলাচল ব্যাহত হয়। দোকানের ভেতরও জোয়ারের পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়েছে।’
সদর উপজেলার ডালভাঙ্গা গ্রামের আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘পাঁচ শতাধিক পরিবার বাঁধের বাইরে বসবাস করে। বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার দিনের জোয়ারে বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ায় আত্মীয়স্বজনের ঘরে আশ্রয় নিতে হয়েছে।’
একই অবস্থা সদরের নলী, নিশানবাড়িয়া, নলটোনা, এম বালিয়াতলী, গুলবুনিয়া, আয়লা ও বদরখালী এলাকার নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ভারি বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি না কমা পর্যন্ত প্রত্যেক জোয়ারে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
বরিশাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আব্দুল কুদ্দুস জানান, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এ কারণে এমন বৈরী আবহাওয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত ও নদীবন্দরে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।