নারায়ণগঞ্জের বন্দরে স্কুলছাত্রকে বলাৎকারের মামলায় এক সহকারী শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার পশ্চিম বন্দরের স্বল্পের চর এলাকায় ৫৮ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শনিবার বিকেলে তাকে আটক করা হয়। রাত ৯টার দিকে শিশুটির বাবার করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে।
৪৫ বছর বয়সী ওই সহকারী শিক্ষকের নাম দুলাল মিয়া। তিনি বন্দরের স্বল্পের চর এলাকার বাসিন্দা।
বন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিক নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে স্কুলে যায় শিশুটি। দুপুর ২টার দিকে স্কুল ছুটি হলে শিক্ষক দুলাল স্কুলের সামনের একটি দোকান থেকে শিশুটিকে সিগারেট কিনে বিদ্যালয়ের অফিসরুমে নিয়ে আসতে বলে। কিছুক্ষণ পর ছাত্রটি অফিসকক্ষে যায়। এ সময় শিক্ষক দুলাল শিশুটিকে বলাৎকার করে। পরে ওই ছাত্র চিৎকার করলে তাকে চুপ থাকতে বলে এবং ঘটনা কাউকে না জানাতে নিষেধ করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।'
পুলিশ পরিদর্শক আবু বক্কর জানান, ১৩ বছরের ওই ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগে স্কুলের ভেতরে এলাকার লোকজন অবস্থান নিয়েছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ। সেখানে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে পড়লে ওই শিক্ষককে থানায় আনা হয়। পরে স্কুলছাত্রের বাবা মামলা করেছেন শিক্ষক দুলালের বিরুদ্ধে।
প্রত্যক্ষদর্শী জানান, স্কুলের এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে সালিশ চলছিল। একপর্যায়ে স্থানীয়রা ওই শিক্ষকের ওপর চড়াও হয়। এরপর তাকে মারধর করে। পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
শিশুটির বাবা বলেন, ‘আমি অটোরিকশাচালক। বৃহস্পতিবার বিকেলে আমার ছেলে বাড়িতে ফেরার পর ওর মা দেখে শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাগ। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে কেঁদে দিয়ে ঘটনা বলে। এরপর আমরা স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ কমিটির লোকজনকে জানাই। তারা শনিবার বিকেলে এ নিয়ে সালিশ বসায়। সেখানে এলাকার লোকজন ঘটনা শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই শিক্ষকের কাছে আমার ছেলে স্কুলে প্রাইভেট পড়ত। এর আগেও তাকে একাধিকবার বলাৎকারের চেষ্টা করেছেন তিনি। আমার ছেলে সব বলেছে।’
পশ্চিম বন্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুবা বলেন, ‘শিক্ষক দুলালের বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগ নিয়ে আমরা ও কমিটির লোকজন শিশুটির পরিবারের সঙ্গে বসেছিলাম ঘটনা সঠিক কি না তা যাচাই করতে। তখনই এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ আসে।’
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘রাতে শিশুটির বাবার করা মামলায় ওই সহকারী শিক্ষককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রোববার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
ওই স্কুলছাত্রকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি।