ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তিন শিক্ষার্থীর ওপর বহিরাগতরা হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
এর প্রতিবাদে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পলিটেকনিকের সামনের সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের উৎপাত বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বহিরাগতমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
পরে পুলিশ ও শিক্ষকদের আশ্বাসে হোস্টেলে ফিরে যান তারা।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ গিয়ে দোষীদের বিচারের আশ্বাসে শিক্ষার্থীদের হলে পাঠিয়ে দেয়।’
বিক্ষুব্ধ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, শনিবার বিকেলে ইনস্টিটিউটের অভ্যন্তরীণ মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় শাহীন হোস্টেলের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে বহিরাগতদের প্রায় ৩০ জনের একটি দল। পরে অন্য শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি টের পেয়ে বহিরাগতরা পালিয়ে যায়।
হামলার শিকার পঞ্চম পর্বের শিক্ষার্থী মো. শাহীন জানান, বিকেলে শাহীন ও শাহাবউদ্দিন হোস্টেলের মাঝামাঝি অবস্থিত মাঠে ফুটবল খেলার আয়োজন করেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
শাহীন বলেন, ‘এ সময় বহিরাগত দুজন ছেলে এসে তাদের খেলায় নিতে বলে। নিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাদের ওপর চড়াও হয়। তারা আমাদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
‘পরে মাগরিবের নামাজের সময় অধিকাংশ শিক্ষার্থী মসজিদে চলে গেলে ৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী দল শাহীন হোস্টেলে ঢুকে আমাকে, দ্বীন ইসলাম ও শামীম নামের দুজন শিক্ষার্থীকে টেনেহিঁচড়ে ভবন থেকে বের করে রাস্তায় নিয়ে যায়।
‘আমাদের চিৎকারে অন্য শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা কলেজের দেয়াল টপকে পালিয়ে যায়।’
মামুনুর রশীদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিনই বহিরাগতদের হাতে নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে কলেজের শিক্ষার্থীরা। বহিরাগতদের ব্যাপারে কেউ ভয়ে মুখ খুলতে চায় না।
‘তারা স্থানীয় পরিচয়ে প্রায়ই কলেজে ঢুকে শিক্ষার্থীদের মারধর ও লাঞ্ছিত করে। তাই হামলার ঘটনার দ্রুত সুষ্ঠু বিচার না হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’
এ বিষয়ে ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আমিনুল ইসলাম ভূঞা বলেন, ‘বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হাতে কলেজের শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হওয়া কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এ ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে কলেজে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনেছি।
‘ঘটনাটি প্রশাসনকে অবহিত করেছি। তাৎক্ষণিক পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এ বিষয়ে আমরা পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’
ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের কোনো ধরনের অপরাধে ছাড় দেয়া হবে না। শিক্ষার্থীরা কয়েকজন বহিরাগতের নাম দিয়েছেন। তাদের শনাক্তের চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।’