নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল খেলার মাঠে নির্মাণাধীন আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুটি ঘরে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৪টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। আগুনে ঘর দুটির কিছু টিন ও কাঠ পুড়ে গেছে।
এ ঘটনায় তিনজনকে আটকের খবর পাওয়া গেছে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় বলাইশিমুল খেলার মাঠের খাসজমিতে ঘরগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।
কেন্দুয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম ও থানার ওসি আলী হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, রাত সাড়ে ৪টার দিকে বলাইশিমুল এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। হালকা বৃষ্টিও হচ্ছিল। এই সুযোগে কিছু দুষ্কৃতকারী নির্মাণাধীন দুটি ঘরের পেছন দিকে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করা কয়েক পুলিশ সদস্য জ্বলন্ত আগুন দেখে দৌড়ে এসে তা নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’
তবে কাউকে আটক করা হয়েছে কি-না সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে চাননি ওসি।
এদিকে কেন্দুয়া উপজেলার ইউএনও মাহমুদা বেগম বলেন, ‘আমি তিনজনকে আটক করার খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেশকাতুল কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা করার প্রস্ততি নিচ্ছেন।’
অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে বলাইশিমুল মাঠ রক্ষা গণকমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের এলাকায় ৮ জন পুলিশ সদস্য ২৪ ঘণ্টা পাহারা দেন। তাদের উপস্থিতিতে আগুন দেয়ার ঘটনাটি রহস্যজনক। আমাদের ধারণা, মাঠ রক্ষার দাবিতে আন্দোলনরতদের হয়রানি করতেই স্থানীয় প্রশাসন অথবা তৃতীয় পক্ষের কেউ আগুন লাগনোর ঘটনা ঘটিয়েছে।’
তিনি দাবি করেন, পুলিশ বিনা তদন্তে ওই এলাকাটিতে গণ গ্রেপ্তার অভিযান পরিচালনা করছে।
জানা গেছে, খেলার মাঠ দখল করে ঘর নির্মাণ করায় কেন্দুয়ায় আন্দোলন শুরু করেছে ৫০১ সদস্যের একটি গণকমিটি। তারা খেলার মাঠের বদলে আশপাশের অন্য কোনো খাসজমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের দাবি জানাচ্ছেন। এ নিয়ে তারা বলাইশিমুল গ্রাম ছাড়াও ঢাকা, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক বিক্ষোভ মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।
গণ কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আগুনের ঘটনার সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কেউ সম্পৃক্ত নন। এর কোনো প্রমাণও নেই। এরপরও আমাদের লোকজনকে হয়রানি করা হচ্ছে।’
এদিকে ইউএনও মাহমুদা বেগম বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য এটিই উপযুক্ত জায়গা। অল্প কিছু লোক ছাড়া সবাই ঘর নির্মাণের পক্ষে।’