বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সোনালি আউশে স্বপ্ন কৃষকদের

  •    
  • ১৩ আগস্ট, ২০২২ ১২:১০

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘পাহাড়পুর ও বেলবাড়ি এলাকায় আড়াই শ বিঘা জমিতে মাত্র একবার ফসল হতো। এখন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় কৃষকরা এই জমিতে ধানসহ তেলজাতীয় ফসলও (তিল, সরিষা) পাচ্ছেন। নিঃসন্দেহে এই এলাকার জন্য এই ফসল সুফল বয়ে আনবে।’

শ্রাবণের বাতাসে দোল খাওয়া সোনালি আউশ ধান সংগ্রহে ব্যস্ত কৃষকরা। প্রথমবারের মতো জমিগুলোতে ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকদের পরিবারে বইছে আনন্দের ঢেউ।

বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পাহাড়পুরের জমিতে শুক্রবার এ চিত্র দেখা যায়।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর বুড়িচং উপজেলায় আউশ আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ২১০ হেক্টর জমিতে। পতিত জমিতে আউশ আবাদ বৃদ্ধির নানা কার্যক্রমের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।

তা ছাড়া প্রায় প্রতিটি গ্রামে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে প্রচলিত ব্রি ধান-৪৮-এর চেয়ে অধিক ফলনশীল ব্রি ধান-৮২, ব্রি ধান ৯৮ ও বিনা ধান-২১-এর বীজ। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বিঘাপ্রতি ১৬ থেক ১৭ মণ ফলন পাওয়া যাচ্ছে এসব ধান থেকে। তাই এ বছর আউশে বাম্পার ফলন প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় কৃষক আবদুল হান্নান বলেন, ‘আগে একটা ফসল পাইতাম। এহন ধানসহ তিনডা (তিনটি) ফসল পাই। কৃষি অফিস আমডারে দেহাশুনা করে। এই সাহসে ধান লাগাইছি। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া, ভালা ধান পাইছি।’

কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পানির ব্যবস্থাডা ঠিক থাকলে এহন থাইক্কা প্রতি বছরই তিনবার ধান পামু। একবার তিল সরিষা চাষ করমু।’

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘পাহাড়পুর ও বেলবাড়ি এলাকায় আড়াই শ বিঘা জমিতে মাত্র একবার ফসল হতো। এখন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় কৃষকরা এই জমিতে ধানসহ তেলজাতীয় ফসলও (তিল, সরিষা) পাচ্ছেন। নিঃসন্দেহে এই এলাকার জন্য এই ফসল সুফল বয়ে আনবে।’

উপজেলার সীমান্তবর্তী আনন্দপুর ও বেলবাড়ি এলাকায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় কুমিল্লায় মাঠ দিবসের আয়োজন করে। প্রথমবারের মতো চাষ করা আউশের জমি পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহিত কুমার দে ও কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসানসহ আরও অনেকে।

পতিত জমিতে আউশ আবাদ বৃদ্ধি কার্যক্রমটির পরিকল্পনা ও সমন্বয়কারী অতিরিক্ত কৃষি অফিসার বানিন রায় অতিথিদের বেলবাড়ি মাঠে প্রথমবারের মতো চাষ হওয়া ৭০ বিঘা জমির আউশের মাঠ ঘুরে দেখান।

কৃষিবিদ বানিন রায় স্থানীয় কৃষকদের পক্ষে পাগলি খালের ওপর স্লুইচ গেট ও খালের পার ঘেঁষে উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহনের জন্য রাস্তার দাবি জানান। এ দাবি বাস্তবায়িত হলে মাঠের ২০০ বিঘা জমিতে দুই ফসলের পরিবর্তে চার ফসল ও ৫০ বিঘা জমিতে বছরব্যাপী সবজি চাষ সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

পাহাড়পুর গ্রামের বেলবাড়ি মাঠে আউশ আবাদ বৃদ্ধির কার্যক্রমটি ব্রি আঞ্চলিক কার্যালয় কুমিল্লার অর্থায়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বুড়িচং দ্বারা বাস্তবায়িত। ব্রি কুমিল্লার গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রম জোরদারকরণ কর্মসূচির আওতায় এর আগে ৪০ জন কৃষককে ব্রি ধান ৪৮ ও ব্রি ধান ৯৮ জাতের বীজ সহায়তা, ব্রি হাইব্রিড ধান ৭ জাতের ২টি প্রদর্শনী, ৬০ বিঘা জমির ২০ কেজি করে ইউরিয়া সার ও ৫৪ জন কৃষকের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সব কার্যক্রম তদারকি করেন উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. সাহেদ হোসেন।

মাঠ দিবসে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান, বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার হালিমা খাতুন, বিএডিসি সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বুড়িচং উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ছামিউল ইসলাম, ব্রি এর বিজ্ঞানীসহ দুই শতাধিক কৃষক-কিষানি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মামুনুর রশিদ।

এ বিভাগের আরো খবর