বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইন্টার্নদের কর্মবিরতিতে ঢাকা মেডিক্যালে চাপ

  •    
  • ১২ আগস্ট, ২০২২ ২০:৫২

জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জরুরি বিভাগে প্রতি শিফটেই ইন্টার্নরা থাকে। গতকাল থেকে নেই। তারা না থাকায় আমাদের কাজে চাপ পড়ছে।’

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সহকর্মীকে মারধরে জড়িতদের শনাক্ত করতে না পারায় কর্মবিরতিতে গেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রায় ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক।

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ঢাকা মেডিক্যালের কোনো চিকিৎসা কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছেন না তারা। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে যোগ না দেয়ায় চাপ পড়েছে হাসপাতালটির পুরো চিকিৎসাব্যবস্থায়।

সাজ্জাদ হোসেন নামের ওই ইন্টার্ন চিকিৎসককে গত সোমবার রাতে কয়েকজন শহীদ মিনারে মারধর করেন। মারধরকারীরা নিজেদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে দাবি করেছিলেন।

ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিচার চেয়ে এই কর্মসূচি পালন করছে হাসপাতালটির ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগসহ অন্তত চারটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও কোনো ইন্টার্ন চিকিৎসক নেই। তারা না থাকায় কাজের চাপ পড়ছে স্থায়ী চিকিৎসকসহ ওয়ার্ডগুলোতে দায়িত্বে থাকা অন্যদের।

মেডিক্যালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসকরা মূলত সকালবেলা সিনিয়র শিক্ষকদের সঙ্গে রাউন্ডে থাকেন। হাতে-কলমে শিক্ষা নেন। এর বাইরে জরুরি বিভাগ এবং অন্য ওয়ার্ডগুলোতেও তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করেন।

জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা একজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জরুরি বিভাগে প্রতি শিফটেই ইন্টার্নরা থাকে। গতকাল থেকে নেই। তারা না থাকায় আমাদের কাজে চাপ পড়ছে।’

শুক্রবার হওয়ায় রোগীর চাপ কম থাকায় সামলে নেয়া যাচ্ছে বলে জানান ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের একজন নার্স।

তিনি বলেন, ‘আজকে রোগী কম। ইন্টার্ন না থাকলেও খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। তবে রোগী বাড়লে চাপ বাড়বে।’

তারা না থাকলেও চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে না বলে দাবি হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হকের। তবে প্রায় ২০০ ইন্টার্ন চিকিৎসক একসঙ্গে কাজ না করায় চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় চাপ পড়েছে বলে স্বীকার করেছেন তিনি।

সহকর্মীকে মারধরের বিচার চেয়ে আল্টিমেটাম দেয় ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ। ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটামের পর বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় তারা।

অবশ্য এমন কর্মবিরতি দিয়ে কিছুটা সমালোচনার মুখেও পড়েছেন ইন্টার্নরা।

কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়ে তারাও পড়েছেন উভয় সংকটে। একদিকে সহকর্মীর বিচার না পাওয়া, অন্যদিকে চিকিৎসা প্রদান থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখা। দুটো বিষয়ই তাদের প্রশ্নের মুখে ফেলছে।

তাই তারা চান, দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হোক।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের এই কর্মসূচিতে পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের নেতারা।

পরিষদের সভাপতি ডা. মহিউদ্দিন জিলানী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চিকিৎসা থেকে নিজেদের বিরত রাখতে চাই না। আমরা বিচার চাই। কিন্তু এই কদিনেও জড়িতদের শনাক্ত করতে না পারাকে প্রশাসনের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছি আমরা। জড়িতদের আইনের আওতায় না আসা পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।’

কর্মবিরতি থেকে সরে আসার আভাস দিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক ডা. মারুফ উল আহসান। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল আমাদের মেডিক্যাল কলেজ প্রশাসনসহ অন্যদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। বৈঠক থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’

ঢাকা মেডিক্যালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘আমরা পুলিশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। জড়িতদের শনাক্তে পুলিশ চেষ্টা করছে।’

ইন্টার্নদের কর্মবিরতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রায় ২০০ ইন্টার্ন আমাদের এখানে রয়েছে। তারা না থাকায় অন্যদের ওপর চাপ পড়ছে। তবে আমাদের চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ নেই।’

মারধরের ওই ঘটনায় সাজ্জাদ মঙ্গলবার শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

মারধরে জড়িতে শনাক্তের বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদূত হাওলাদার বলেন, ‘ভুক্তভোগী জিডি করেছেন। ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় আমরা সরাসরি কাউকে শনাক্ত করতে পারিনি। আমরা কয়েকজন সন্দেহভাজনকে দেখিয়ে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে শনাক্তের চেষ্টা করেছিলাম।

‘সেটাও সম্ভব হয়নি। কারণ অন্ধকারে কয়েকজন মিলে মারধর করায় ভুক্তভোগী কাউকে দেখলে চিনতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন। আমরা তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। আশা করছি, একটু সময় লাগলেও জড়িতদের শনাক্ত করতে পারব।’

এ বিভাগের আরো খবর