দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে সারা দেশে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন চা শ্রমিকরা।
শনিবার থেকে সারা দেশে একযোগে শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল।
ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা শুক্রবার বিকেলে নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দুই বছর পরপর চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির চুক্তি হওয়ার কথা। বর্তমানে মজুরি চুক্তির মেয়াদ প্রায় ১৯ মাস পেরিয়েছে। চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের বিভিন্ন সংগঠন মজুরি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করছেন না।
‘চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন ভ্যালি কমিটির উদ্যোগে কয়েক দিন ধরে মৌলভীবাজারে দুই ঘণ্টা করে চা বাগানগুলোতে কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ সমাবেশ হচ্ছে।’
তিনি জানান, বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ৩০০ টাকা মজুরি চুক্তিসহ চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি আদায় না হওয়ায় শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দেশের ১৬৭টি চা বাগানে এই কর্মবিরতি চলবে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-দলই ভ্যালি কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল দাস পাইনকা বলেন, ‘৩০০ টাকা মজুরি, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন সুবিধাসহ ১২০টি পয়েন্টে আমরা এর আগে লিখিত দাবি জানিয়েছিলাম। তবে মালিকপক্ষ এই দাবি না মানার কারণে মজুরি বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বারবার কথা বলেও কোনো কার্যকরী উদ্যোগ দেখা যায়নি।
‘মজুরি বোর্ডের কাছে আমাদের প্রস্তাব হলো, দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা ন্যূনতম করতে হবে।’
মৌলভীবাজারে আন্দোলনরত শ্রমিক নেতাদের নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সমঝোতা বৈঠকে বসেছিল শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দপ্তর। সে বৈঠকে মালিক পক্ষ না থাকায় আন্দোলন স্থগিত না করার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন।
এ কথা জানিয়ে ইউনিয়নের সহসভাপতি পংকজ কন্দ বলেন, ‘মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আমরা চার দিন ধরে দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি করে আসছি। মালিকপক্ষ থেকে কোনো সাড়া আসেনি, তাদের টনক নড়েনি।
‘দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি শেষে প্রতিদিনই শ্রমিকরা বাগানের সব কাজ করছেন... যেন আন্দোলনের ফলে চা শিল্পের কোনো ক্ষতি না হয়। এটা চা বাগানের প্রতি আমাদের ভালোবাসা। কিন্তু মালিকপক্ষ যদি মনে করে এই ভালোবাসা আমাদের দুর্বলতা, তাহলে তারা ভুল করবে। গত চার দিন আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়েছি। আজ (শুক্রবার) বিকেলের মধ্যে সমাধান না পেলে আমরা আগামীকাল থেকে কঠোর আন্দোলনে নামব।’