বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ সুখে আছেন বলে মনে করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে।’
শুক্রবার সকালে সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পে ‘ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ক’ মতবিনিময় সভা শেষে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এমনটি বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে; একটি পক্ষ থেকে এমন প্যানিক ছড়ানো হচ্ছে। বাস্তবে এর কোনো ভিত্তি নেই।’
মন্ত্রী কথা বলেছেন সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা জমা রাখার বিষয়ে সরকারের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য না চাওয়ার দেশটির রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য নিয়েও।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে সুইস রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, তার দেশের কাছে বাংলাদেশ কারও বিষয়ে তথ্য জানতে চায়নি।
তিনি বলেন, ‘তথ্য পেতে হলে কী করতে হবে, সে সম্পর্কে আমরা সরকারকে জানিয়েছি, কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো তথ্যের জন্য আমাদের কাছে অনুরোধ করা হয়নি। আন্তর্জাতিক মান অনুসারে আমরা যেকোনো ধরনের তথ্য আদান-প্রদানের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও চুক্তি করতে পারি। ইতোমধ্যে আমরা বাংলাদেশ সরকারকে এ বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর বিষয়ে সব তথ্য সরবরাহ করেছি।’
তার এ বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের পর সুইস ব্যাংকে অর্থ জমাকারীদের তথ্য কেন জানতে চাওয়া হয়নি, তা সরকার ও দুদককে জানাতে আদেশ দেয় হাইকোর্ট।
সুইস ব্যাংকে জমা করা অর্থের বেশির ভাগই অবৈধ পথে—এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে কি না, তা রোববারের মধ্যে জানাতে বলে আদালত।
তাই সুইস ব্যাংকের কাছে নতুন করে তথ্য চাওয়া হবে কি না; এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যেসব দেশে অর্থ পাচার হয়, তাদের কাছে তথ্য চাওয়া হলে তারা তথ্য দিতে চায় না। এটা তাদের মজ্জাগত সমস্যা।’
সুইস রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ডের বক্তব্য ঠিক নয় দাবি করে মোমেন জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সুইস ব্যাংকের কাছে অতীতে ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করে চিঠি দিয়ে তাদের অর্থের তথ্য চাওয়া হয়েছিল। বলেন, ‘সে সময় তারা শুধু একজনের তথ্য দিয়েছিল। আরও কয়েকবার তথ্য চাওয়া হলেও তাদের রাষ্ট্রদূত বলেছেন তথ্য চাওয়া হয়নি।’এ সময় সুইজারল্যান্ডকে বাংলাদেশের বন্ধু দেশ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাদেরকে তথ্যের বিভ্রাট না করার আহবান জানান।
দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক মন্দায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে। বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে; একটি পক্ষ পিনিক ছড়ানোর জন্য এমন কথা বলে।’
মতবিনিময় সভায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, বিমান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেনসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে রিজিওনাল হাব হিসেবে ব্যবহার করতে এ বিমানবন্দরে উন্নয়নকাজ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রানওয়ে বড় করাসহ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে নতুন টার্মিনাল ভবনের কাজ চলছে।
‘আমরা এতদূর অগ্রসর হয়েছি যে আগামীতে সিলেট থেকে সরাসরি নিউ ইয়র্কে ফ্লাইট যাবে।’