‘তুই বড় সাংবাদিক হইয়া গেছস, তোর লাইগ্যা আমি মামলায় ফাঁসছি। এতে আমার ৯০ হাজার টেহা খরচ হইছে। তোর পা কাইট্যা নিয়া যাইয়াম।’
সংবাদ প্রকাশের জেরে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে এক সাংবাদিককে এভাবেই হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে গৌরীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাংবাদিক মশিউর রহমান কাউসার। তিনি দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার গৌরীপুর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ও গৌরীপুর প্রেস ক্লাবের সদস্যসচিব।
অভিযুক্ত মঞ্জুরুল ইসলাম উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি। পৌর এলাকার মধ্য ভালুকা মহল্লার ময়েজ উদ্দিনের ছেলে তিনি।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান আবদুল হালিম সিদ্দিকী লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৭ মার্চ ‘গৌরীপুরে হাতুরি পেটায় হাঁটু ভাঙল ছাত্রলীগ নেতার’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় মশিউরের। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ সুলতান জনির ওপর হামলার ওই ঘটনায় মামলায় ২ নম্বর আসামি মঞ্জুরুল ইসলাম।
এ সংবাদ প্রকাশের জেরে মশিউরের ওপর ক্ষুব্ধ হন মঞ্জুরুল। গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন এলাকায় সাংবাদিক কাউসারের ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানে যান মঞ্জুরুল ও তার সহযোগী সিদ্দিক মিয়া। ওই সময় মশিউরকে নানা হুমকিসহ প্রাণনাশের হুমকি দেন মঞ্জু।
অভিযোগকারী মশিউর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে মঞ্জুরুলের কোনো বিরোধ নেই। নিউজ করায় আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে পা কেটে নেয়ার হুমকি দেন।'
হুমকির কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। মঞ্জুরুল প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে আমিসহ আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।’
তবে হুমকি দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা। মঞ্জুরুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হুমকি দেয়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তার সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধ থাকায় মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ তোলা হয়েছে।’
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান আবদুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, ‘ঘটনাটি তদন্ত করে পা কেটে নেয়ার হুমকি দেয়ার প্রমাণ মিললে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে। অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা হবে।’