পণ্যমূল্য ও জ্বালানির দর বৃদ্ধিজনিত যে সংকট, সেটি গোটা বিশ্বেই একই রকম জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অন্য দেশে সংকটের জন্য সরকারকে দায়ী করা হচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক জরুরি সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ৫ আগস্ট মধ্যরাত থেকে ডিজেল ও কেরসিনের নাম লিটারে ৩৪ টাকা এবং পেট্রল ও অকটেনের নাম যথাক্রমে ৪৪ ও ৪৬ টাকা বাড়ানোর পর তীব্র সমালোচনা হচ্ছে।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘সারা দুনিয়ার পরিস্থিতি, বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া সবকিছু জেনেশুনে এটা করা হয়েছে।
‘আমরা আগেই বলেছি এটা আমরা বাধ্য হয়ে, নিরুপায় হয়ে করেছি। মানুষকে আমরা কষ্ট দিতে চাইনি। কিন্তু আমাদের সামনে অন্য কোনো বা বিকল্প কোনো পথ ছিল না।’
বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমলে তখনই সরকার কমাবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যখন স্বাভাবিক সময় আসবে, তখন আমরা আমাদের প্রমিজ থেকে পিছিয়ে যাব না।’
অর্থনৈতিক চাপের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সংকট তৈরি হয়েছে সেটা যুদ্ধের কারণে এবং এটা বৈশ্বিক সংকট। কিন্তু কোনো দেশে এজন্য সরকার দায়ী করা হচ্ছে না।
‘শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের বিষয় আলাদা। সেখানে একটা পটপরিবর্তন হয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যা হচ্ছে সরকারকে দায়ী করে কোনো মিছিল কোনো দেশে হচ্ছে না। কিন্তু এদেশে আজকেও বিএনপিসহ তাদের দোসররা মাঠে নেমেছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করছে, বিষোদগার করছে।
‘সরকার উৎখাতের চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে। এই সংকটে সহযোগিতা করবে না। এটা তারা জানান দিয়েছে।’
এই সংকট থেকে শেখ হাসিনাই মুক্তি দিবে পারবেন উল্লেখ করে ‘একটু ধৈর্য’ ধরার পরামর্শও দেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, ‘আমার তো মনে হয় এই ক্রাইসিস থেকে তিনি মুক্তি দিতে পারবেন। সেই আত্মবিশ্বাস আমাদের নেত্রীর রয়েছে। আজকের সংকট সাময়িক। এই সংকট কেটে যাবে।’
‘পুলিশকে আক্রমণ করায় প্রাণহানি’
বিএনপির বিক্ষোভ এবং ভোলায় দুই জনের প্রাণহানি নিয়েও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। এই প্রাণহানির দায় তিনি দেন বিএনপিকে। বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য নিয়ে নানা কথা বলছে। বক্তব্য দিচ্ছে, ভাষণ দিচ্ছে, কাউকে তো সরকার গ্রেপ্তার বা নিষেধ করেনি। কিন্তু আপনি যদি অস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর চড়াও হন, তখন তারা কী করবে? তাদের আসল উদ্দেশ্যও এটা।’
সভায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
‘শরিকদের প্রতিবাদ কোনো বিষয় না’
শরিকদের প্রতিবাদের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জোটের শরিকদের দলগতভাবে কর্মসূচি দেয়ার অধিকার আছে। তারা করতে চাইলে করবে। এটা তো কোনো কথা না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের জোট তো আমাদের ইলেকশন অ্যালায়েন্স, সেটা তো কৌশলগত জোট। সেখানে আদর্শের কোনো বিষয় নেই। তাহলে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমরা কেন জোট করেছি? এসব ব্যাপার তো ভাবতে হবে।’