পাঠকপ্রিয় থ্রিলার সিরিজ ‘মাসুদ রানা’ র ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দিয়ে বইগুলোর বিক্রির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের করা লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) মঞ্জুর করে সোমবার এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মুরাদ রেজা ও হামিদুল মিসবাহ। আর রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও মো. ইফতাবুল কামাল।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান নিউজবাংলাকে বলেন, “কাজী আনোয়ার হোসেনের পক্ষে পরিবারের করা লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে আপিল তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ‘মাসুদ রানা’ র ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বই বেচাবিক্রির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছে আদালত। এর ফলে এই ৩১০টি বই বেচাবিক্রি করা যাবে না। সেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে।”
মামলা থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই শেখ আব্দুল হাকিম ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কপিরাইট আইনের ৭১ ও ৮৯ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগ দাখিল করেন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আইনি লড়াই শেষে ২০২০ সালের ১৪ জুন বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়। পরে এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কাজী আনোয়ার হোসেন হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করে।
রুলে এখতিয়ারবর্হিভূত হওয়ায় কপিরাইট অফিসের ওই সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সংস্কৃতি সচিব, কপিরাইট অফিস, রেজিস্ট্রার অফ কপিরাইটস ও কপিরাইট বোর্ডকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
ওই রুলের দীর্ঘ শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর রিট খারিজ করে রায় ঘোষণা করে। এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করা হয়। আদালত কাজী আনোয়ারের পরিবারের সদস্যদের এই আবেদন গ্রহণ করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেয়।