১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বিয়ের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যার অভিযোগে নাহিদ হাসান নামে এক যুবককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
রোববার বিকেলে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক তারিক হোসেন এই আদেশ দেন। এ সময় অভিযুক্ত নাহিদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জলসিংপুর বাউড়া কোর্ট গ্রামের মোতালেব হোসেনের কিশোরী কন্যার সঙ্গে একই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে নাহিদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও তৈরি হয়। এতে মেয়েটি চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের স্বজনরা নাহিদকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এই প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
কিছুদিন পর ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল ওই কিশোরীকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে বাড়ির অদূরে একটি ভুট্টাক্ষেতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
দুদিন পর ভুট্টাক্ষেতে মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন এলাকাবাসী। পরে নিহতের বাবা মতলুব হোসেন মিঠাপুকুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় তখন আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
তবে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে নাহিদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আদালত সূত্র জানায়, মামলায় ১৪ জনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিচারক আসামি নাহিদকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রায় দেন।
সরকারপক্ষের আইনজীবী নয়নুর রহমান টফি বলেন, ‘আমরা মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আসামি যে অপরাধ করেছে, তার জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি আশা করেছিলাম। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।’
এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হক প্রমাণিক বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’