বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম ৭৮ শতাংশ কমার তথ্য দিলেন ফখরুল

  •    
  • ৭ আগস্ট, ২০২২ ১৪:৫৭

‘আমাদের হাছান মাহ্‌মুদ সাহেব বললেন, বিশ্বের সব দেশে নাকি তেলের দাম এর চেয়ে বেশি। কিন্তু আমেরিকায় ১৪ ডলার ছিল, তেলের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে তা ৩ ডলারে এসে পৌঁছেছে। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমছে তখন সেই দেশও কমিয়েছে। আর আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ানো হয়।’

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়া থেকে কমতে থাকার মধ্যে দেশের বাজারে কেন দাম বাড়ানো হলো, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি জেনেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের দাম ৮০ শতাংশ কমে গেছে।

বিএনপি মহাসচিব এও বলেছেন, তেলের দাম বাড়ার কারণে চালসহ সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাবে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষের খেয়ে পড়ে চলাই অনিশ্চিত হয়ে যাবে।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদ এবং ভোলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নূরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে রোববার নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে কৃষক দলের বিক্ষোভ সমাবেশ তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সমাবেশের সময় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেয়ায় সেখানে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে তীব্র গরমে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়।

শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা আর অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়ায় সরকার। দেশের ইতিহাসে এক দিনে এত পরিমাণ দাম এর আগে কখনও বাড়েনি। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে নিরূপায় হয়ে দাম বাড়ানোর কথা জানানো হয়েছে।

এই দাম বাড়ানোর পরও ডিজেলে লিটারে এখনও ৮ টাকার বেশি লোকসান হবে বলে জানিয়েছে জ্বালানি মন্ত্রণালয়। তবে অকটেন ও পেট্রলে এখন মুনাফা করবে বাংলাদেশ পেট্রলিয়াম করপোরেশন বা বিপিসি।

ফখরুল দাবি করছেন, সরকার মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের হাছান মাহমুদ সাহেব বললেন, বিশ্বে সব দেশে নাকি তেলে দাম এর চেয়ে বেশি। কিন্তু আমেরিকাতে ১৪ ডলার ছিল তেলের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে তা ৩ ডলারে এসে পৌঁছেছে।‘

অর্থাৎ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের দাম ৭৮ শতাংশ কমেছে।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমছে তখন সেই দেশও কমিয়েছে। আর আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়ানো হয়। কারণ, সরকার যে লুটপাট করে, চুরি করে, দুর্নীতি করে সেই টাকাকে হালাল করার জন্য জনগণের পকেট থেকে কেটে নিয়ে যায়।’

এখন লোকসান করলেও ২০১৪ সালের পর সাত বছরে বিপিসির মুনাফা করার বিষয়টি তুলে ধরেন ফখরুল। বলেন, ‘বলছেন যে পেট্রলিয়াম করপোরেশন লোকসানে যাচ্ছে। লোকসানে কেন যাবে? ৫ বছর আগে তো এই প্রতিষ্ঠান লাভ করেছে প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা। তখনও আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কম ছিল। কিন্তু আপনারা কমাননি। এখনও কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমতে শুরু করেছে।’

বিএনপি নেতা মনে করেন, তেলের দাম করায় দেশের সর্বনাশ হয়েছে। বলেন, ‘এখন প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়বে। চাল, তেলের দাম বাড়বে। কৃষকের সারের দাম বাড়বে, যাতায়াত খরচ বেড়ে যাবে। অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পরবে। অর্থনীতি আরও খারাপের দিকে যাবে।

‘যারা বাইক চালিয়ে তাদের পরিবার পালন করে, বউ-বাচ্চার খরচ জোটায় তারা এখন চোখে অন্ধকার দেখছে। চোখে অন্ধকার দেখছে কৃষকেরা। ডিজেলের দাম বাড়লে তারা কীভাবে সেচের কাজ করবেন? এগুলো নিয়ে সরকারের কিছু যায় আসে না।’

জনগণকে সরকারের দরকার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকার তো পুলিশ আর বন্দুক বাহিনী দিয়েই দেশ চালাবে। আর হবে না। এই দেশে আর এভাবে দেশ চালাতে দেবে না। আমাদের রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে, অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, আমাদের ভবিষ্যতকে ধ্বংস করেছে। সুতরাং এই সরকারকে আর ঠিকতে দেয়া যায় না।’

নিজেদের মধ্যে আর ছোটখাট বিভেদ সৃষ্টি না করে সরকারের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।

সরকারের একটা তথ্যও সঠিক নয়

গত এক যুগে দেশের উন্নয়নের যে সূচকগুলো সরকার তুলে ধরে, তার একটিও সঠিক নয় বলেও দাবি করেন বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, কিছু মানুষকে আপনারা ধনী বানিয়েছেন আর কিছু মানুষকে গরিব থেকে গরিবে নিয়ে গিয়েছেন। বড় বড় বড়াই করেন। মিথ্যা তথ্য দেন। একটা তথ্যও তাদের সঠিক না। সমস্ত তথ্যই হচ্ছে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য।

‘জনগণকে আহ্বান জানাব, এদের তথ্যে বিভ্রান্ত না হয়ে সত্যিকার যে বিষয়টা, নিজেকে প্রশ্ন করুন। তাহলে দেখবেন চাল, সবজির, মাছের দাম কত বেড়েছে? তাহলেই বুঝবেন দেশের অবস্থা কী?

‘গ্যাসের দাম বাড়িছেন, পানির দাম বাড়িয়েছেন। পেট্রল-ডিজেল সব কিছুর দাম বাড়িয়েছেন। কোথায় যায় মানুষ?’

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের পকেটে তো বহু দুর্নীতির টাকা আর ঘুষের টাকা। আমাদের পকেটে তো নাই। বেঁচে থাকার পয়সাও তো শেষ হয়ে যাবে।’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কৃষিক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম।

এ বিভাগের আরো খবর