ঝালকাঠি সদর উপজেলায় হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় খাল থেকে এক ট্রলারচালককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
কির্তিপাশা ইউনিয়নের ভিমরুলী গ্রামের দুয়ারী খাল থেকে শনিবার রাত ১১টার দিকে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
২৬ বছর বয়সী পার্থ হালদারকে উদ্ধার করে দ্রুত ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাত দেড়টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পরিবারের দাবি, স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) মালিক মো. জীবন টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে পার্থকে হত্যার চেষ্টা করেছেন।
নিউজবাংলাকে পার্থকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে কির্তিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, ‘অভিযুক্ত জীবন পার্থের কাছে টাকা পাবেন বিষয়টি সত্যি। এর জেরে গত শনিবার জীবন খালে পার্থের ট্রলার আটকায়। তবে পার্থকে কে খালে ফেলল সে বিষয়টি এখনও জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে।’
পার্থ হালদারের চাচাতো ভাই সজীব হালদার শনিবার রাত সোয়া ২টার দিকে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখনও হাসপাতালেই আছি। পার্থের শারীরিক অবস্থা ভালো না। এখনও অচেতন অবস্থায় আছে সে।’
সজীব আরও বলেন, ‘কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারায় কয়েক দিন ধরে পার্থের সঙ্গে ঝামেলা চলছিল ভিমরুলীর ‘পেয়ারা চাষি সমবায় সমিতি’ সমিতির মালিক জীবনের সঙ্গে। এর বাইরে পার্থর সঙ্গে আর কারও কোনো শত্রুতা নেই।’
পার্থের স্ত্রী সমাপ্তি হালদার বলেন, ‘ছয় মাস আগে জীবন বাবুর সমিতি থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নেন পার্থ। কিস্তির টাকা শোধ করতে ট্রলার ভাড়া নিয়ে পেয়ারা বাগানে পর্যটকদের ঘুরে দেখানোর কাজ করেন। অভাবের সংসারে দৈনিক অল্প যা আয় হয় তা দিয়েই দিন চলত। এর মধ্যে কিস্তির টাকা দিতে না পারায় সমিতি থেকে লোকজন প্রতিদিন পার্থকে মারতে আসত। তারাই আমার স্বামীকে হত্যার চেষ্টা করেছে।’
পার্থকে উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া সাগর হালদার নিউজবংলাকে বলেন, ‘এনজিও মালিক জীবনের সঙ্গে গত শনিবার বিকেলেও তর্ক হয়েছে পার্থের। তারাই তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে বলে আমার ধারণা।’
এদিকে পার্থের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতে থানায় অভিযোগ দিতে পারেনি তার পরিবার। পার্থর বাবা মানসিক ভারসাম্যহীন ও দুই বছরের মেয়েকে নিয়ে রাতে থানায় যেতে পারেননি বলে জানান সমাপ্তি হালদার।
সমিতির মালিক অভিযুক্ত জীবন রাত থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’