খুলনা-যশোর অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি ও অভিযানের মধ্যেও চিংড়িতে অপদ্রব্য মিশিয়ে জালিয়াতির ব্যবসা থামছে না। জেলি পুশ করা চিংড়ি রপ্তানি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ওই এলাকায় চিংড়ি ব্যবসায় ধস নামার শঙ্কা প্রকাশ করেছে খোদ মৎস্য বিভাগ।
যশোরে বৃহস্পতিবার রাতেও জেলি পুশ করা ২৪০ কেজি চিংড়ি জব্দ করেছে র্যাব। এ ঘটনায় এক ব্যক্তিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
র্যাব-৬ যশোরের কোম্পানি কমান্ডার নাজিউর রহমান শুক্রবার দুপুরে এ তথ্য জানান।
বৃহস্পতিবার রাতে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের আরবপুর এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে একটি ট্রাক থেকে ১৬টি বাক্সভর্তি ভেজাল মেশানো চিংড়ি জব্দ করা হয়।
এই জালিয়াতির দায়ে ওই চিংড়ি চালানের মালিক রণজিৎ মণ্ডলের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তিনি মাম্পি অ্যান্ড প্রান্ত ফিশ নামের প্রতিষ্ঠানের মালিক। তার বাড়ি সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার যুগীবাছী গ্রামে।র্যাব কর্মকর্তা নাজিউর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে গোপন তথ্যে জানা যায়, একটি ট্রাকে জেলি পুশ করা চিংড়ি সাতক্ষীরা থেকে যশোর হয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ীর দিকে যাচ্ছে। তাৎক্ষণিক র্যাব সদস্যরা আরবপুরে অবস্থান নেন।
রাত ১১টার দিকে মাছভর্তি একটি ট্রাক তল্লাশি করা হয়। সেখানে ১৬টি বাক্সের চিংড়িতে জেলি পুশ করার প্রমাণ পাওয়া যায়। একপর্যায়ে মালিকপক্ষ এই জালিয়াতির কথা স্বীকার করে। তাদের ১ লাখ টাকা জরিমানা করে সব চিংড়ি ধ্বংস করা হয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, এই এলাকায় দুই মাসে ছয়টি অভিযানে ২০ টন জেলি পুশ করা চিংড়ি জব্দ করেছে র্যাব। খুলনা ও যশোর অঞ্চলে র্যাবের নিয়মিত অভিযানেও বন্ধ হচ্ছে না চিংড়িতে জেলি পুশ জালিয়াতি।
চিংড়িতে জেলি পুশ করায় যশোরসহ আশপাশের এলাকায় চিংড়ি ব্যবসায় ধস নামার শঙ্কায় আছে মৎস্য বিভাগ। বিশেষ করে অপদ্রব্য পুশ করা চিংড়ি বিদেশে পাঠানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে যশোর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘যশোরে জেলি পুশ করা হয় না। খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট এলাকায় চিংড়ি উৎপাদন হয়। সেখানেই চিংড়িতে পুশ করা হয় নানা ধরনের অপদ্রব্য। যশোর হয়ে যেন অপদ্রব্য মিশ্রিত চিংড়ি দেশের কোথাও যেতে না পারে, সেদিকে কঠোর নজরদারি রয়েছে।’
তিনি জানান, গত দুই মাসে চার দফায় জেলি পুশ করা চিংড়ি জব্দ করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।