বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘শিক্ষকের বেত্রাঘাতে’ মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যু

  •    
  • ৫ আগস্ট, ২০২২ ১৯:৩২

শিহাবের মা খালেদা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, “আমার ছেলেকে যখন বাসায় আনা হয় তখন তার অনেক জ্বর। অনেক রাতে সে আমাদের বলে, ‘আমার কেন জ্বর তোমরা কেউ জানতে চাইলে না? আমার হাত থেকে ভাত পড়ে গেছে দেখে হুজুর আমাকে জোড়া বেত দিয়ে অনেক পিটিয়েছে।’”

কুমিল্লার বরুড়ায় মাদ্রাসাশিক্ষকের বেত্রাঘাতে ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিক্ষককে আটক করা হয়েছে।

অসুস্থ অবস্থায় ১৫ বছরের মো. শিহাবকে শুক্রবার সকালে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে বেলা ১টা ১২ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

তথ্যগুলো নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার।

শিহাবের বাড়ি বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের শশইয়া গ্রামে। সে ইউনিয়নের মেড্ডা আল মাতিনিয়া নূরানী মাদ্রাসায় পড়ত।

তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুর রবের বিরুদ্ধে।

শিহাবের ভাবি সাবিকুন নাহার ঝুমুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার দেবরকে কয়েক দিন আগে শিক্ষক আব্দুর রব বেত দিয়ে মারেন। এ সময় সিহাব অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষকরা তাকে ওষুধ এনে খাওয়ান। তাতেও সে সুস্থ না হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা থেকে ফোন করে শিহাবের অসুস্থতার খবর জানানো হয়।

‘আমার শ্বশুর গিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় শুক্রবার সকালে উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ডাক্তার তাকে কুমিল্লা মেডিক্যালে পাঠায়। ওইখানে নিলে দুপুরে সে মারা যায়।’

শিহাবের মা খালেদা বেগম নিউজবাংলাকে বলেন, “আমার ছেলেকে যখন বাসায় আনা হয় তখন তার অনেক জ্বর। অনেক রাতে সে আমাদের বলে, ‘আমার কেন জ্বর তোমরা কেউ জানতে চাইলে না? আমার হাত থেকে ভাত পড়ে গেছে দেখে হুজুর আমাকে জোড়া বেত দিয়ে অনেক পিটিয়েছে।’

“আমার ছেলের ছোট থেকে হাত ভাঙা। আমগাছ থেকে পড়ে গিয়ে হাত ভাঙে। তাই হয়তো হাত থেকে ভাত পড়ে গেছে। এ জন্য তাকে মারল আব্দুর রব হুজুর। আমার ছেলে জ্বরে সকালে বমি করে দেয়। এরপর আমরা হাসপাতাল নিই।”

তিনি বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমার ঘরে এত ভাত, আমার ছেলেকে ভাতের জন্য মারল!’

অভিযুক্ত মাদ্রাসাশিক্ষক আব্দুর রব। ছবি: সংগৃহীত

ঝলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি স্থানীয় মেম্বারের কাছে শুনেছি মাদ্রাসার একজন শিক্ষক তাকে প্লেট দিয়ে আঘাত করেছে। মাদ্রাসায় খোঁজ নিয়ে শুনেছি এমন কিছুই, তবে সিরিয়াস কিছু হয়নি। আমি এখন ঘটনাস্থলে যাচ্ছি, সেখানে গিয়ে জেনে বিস্তারিত বলতে পারব।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রবের মুঠোফোনে দুপুরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। নিউজবাংলার পরিচয়ে খুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

মেড্ডা আল মাতিনিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আহমেদ শফি বলেন, ‘আমি সিহাবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। আপনি পরে ফোন করলে খুশি হব।’

কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোখলেসুর রহমান জানান, শিহাবকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত করলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

মরদেহ থানায় নেয়া হয়েছে জানিয়ে বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বলেন, ‘আমরা মরদেহের পিঠে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। ওই শিক্ষককেও জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নিয়েছি। অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর