ইন্দোনেশিয়া থেকে বাংলাদেশে এসেছে বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আমদানি করা ৫৪ হাজার ৬৫০ টন কয়লা। এর মধ্যে ১৮ হাজার টন কয়লা ইতোমধ্যেই রামপালে পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে নোঙর করেছে কয়লাবোঝাই তিনটি লাইটার জাহাজ। বাকি ৩৬ হাজার টন কয়লা নিয়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী এমভি আকিজ হেরিটেজও মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে।
এর আগে গত ৩১ জুলাই এমভি আকিজ হেরিটেজ জাহাজটি ৫৪ হাজার ৬৫০ টন কয়লা নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে ১৮ হাজার ৬৫০ টন কয়লা খালাস করে তিনটি লাইটার জাহাজে করে আগেই রামপালে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
আকিজ হেরিটেজ জাহাজ থেকে এক-তৃতীয়াংশ কয়লা আগেই পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে মূলত জাহাজটিকে কিছুটা হালকা করার জন্য। যেন এটি কোনো বাধা ছাড়াই মোংলা বন্দরে এসে ভিড়তে পারে।
শুক্রবার সকাল থেকেই রামপালে পৌঁছানো কয়লার খালাস শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ডিজিএম আনোয়ারুল আজীম।
তিনি বলেন, ‘কয়লা খালাসের কাজ শুরু হয়। এখন থেকে ধারাবাহিকভাবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি কয়লা আসবে।’
রামপালে ইতোমধ্যে ১৮ হাজার ৬৫০ টন কয়লা পৌঁছেছে
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগি শিপিংয়ের ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক জানান, গত ২০ জুলাই ইন্দোনেশিয়ার তানজুম ক্যাম্ফা বন্দর থেকে ৫৪ হাজার ৬৫০ টন কয়লা নিয়ে আকিজ হেরিটেজ জাহাজটি ছেড়ে আসে। পরে ৩১ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়লে জাহাজ থেকে ১৮ হাজার ৬৫০ টন কয়লা খালাস করে আগেই রামপালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বাকি ৩৬ হাজার টন কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে জাহাজটি ছেড়ে আসে।
শুক্রবার বিকেলে আকিজ হেরিটেজ মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছায়। সন্ধ্যার মধ্যে জাহাজটি মোংলা বন্দরের হারবাড়িয়া-১১ নম্বর বয়ায় অবস্থান করার কথা রয়েছে।
এ ছাড়া শুক্রবার বিকেলেই মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছায় লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী আরেকটি জাহাজ এমভি ড্রাগনবল। এই জাহাজে করে রূপপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫ হাজার ৬০১ টন যন্ত্রপাতি এসেছে রাশিয়া থেকে। জাহাজটি বন্দরের রহারবারিয়ার ৭ নম্বর বয়ায় নোঙর করেছে। সন্ধ্যা নাগাদ এটিকে বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে নোঙর করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রজেক্ট নামে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রামপাল উপজেলার সাপমারী এলাকায় অবস্থিত। ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে।
২০১০ সালে ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রকল্পটি যাত্রা শুরু করে। ২০১২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে মোট ১৬ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এখান থেকে দুই ইউনিটে ৬৬০ মেগাওয়াট করে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা রয়েছে। উৎপাদিত এই বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে বলে জানা গেছে।