বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ছাত্রলীগের পদ ছাড়াই বিদায় নিতে হবে অনেক কর্মীকে

  •    
  • ৫ আগস্ট, ২০২২ ১৪:১২

ছাত্রলীগের নতুন সম্মেলনের ব্যাপারে সংগঠনটির নেতৃত্বের ওপর চাপ আছে। চলতি কমিটি চার বছরের বেশি সময় ধরে আছে। এখন নতুন কমিটি হলে ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যাবে অনেক কর্মীর। অনেকে আগ্রহী হবেন না।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগের সর্বশেষ ২৯তম জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল ২০১৮ সালের মে মাসে। এই কমিটির অধীনে যারা ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেছিলেন, তাদের অনেককে কোনো পদ ছাড়াই ছাত্র রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হবে। কেননা কমিটির বয়স চার বছরেরও বেশি হয়েছে। সে সময়ে যারা কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করেছিলেন, তাদের অনেকের গ্রাজুয়েশন শেষ হয়েছে, আবার অনেকের শিক্ষা জীবন সম্পূর্ণ হয়েছে।

যাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী স্বাভাবিকভাবে তারা ছাত্রলীগে কোনো পদ পাবেন না। আর যারা শিক্ষা জীবনের শেষ দিকে পৌঁছেছেন, তারা ছোটখাটো পদ নিতে চাইবেন না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সে পড়া এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২০০৮ এর শুরুর দিকে রাজনীতি শুরু করি। নতুন হওয়ায় ওই সম্মেলনে পদ পাইনি। এখন মাস্টার্সে পড়ছি। আগামী সম্মেলন হতে হতে ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যেতে পারে। যদি না হয়, তাহলে হয়তো ছোট-খাটো পদ পেতে পারি। কিন্তু শিক্ষাজীবনের শেষ সময়ে এসে ছোট-খাটো পদ চাই না।’

ওই শিক্ষার্থী জানান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত অন্তত তিনটি ব্যাচের ছাত্রছাত্রী এ অবস্থায় পড়বেন।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয় ছাত্রলীগের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতার সঙ্গে। তারা হলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। তবে আব্দুর রহমান ও বি এম মোজাম্মেল হক ছাড়া অন্য দু’জনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যকে শুরুতে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে নেতৃত্ব দেয়া হলেও ২০২০ সালের ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাদের পূর্ণাঙ্গ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ফাইল ছবি

বি এম মোজাম্মেল হক এ বিষয়ে বলেন, ‘এটি একটি বাস্তব সমস্যা। করোনার কারণে গত দু’বছর ছাত্রলীগের সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে অনেক কর্মীকে পদ ছাড়া বিদায় নিতে হবে। তবে, চলতি আগস্ট মাস পার হলে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের আরও কিছু সহযোগি সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।’

২০১৮ সালের মে মাসে ছাত্রলীগের সম্মেলন হলেও কমিটি ঘোষণা করা হয় জুলাইয়ে। এতে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান রেজওয়ানুল হক চৌধুরী ও গোলাম রাব্বানী। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে পদ হারান দুজন। তাদের জায়গায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় আল নাহিয়ান খান ও লেখক ভট্টাচার্যকে। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আল নাহিয়ান খান ও লেখক ভট্টাচার্যকে ‘ভারমুক্ত’ করা হয়।

এর পরে কমিটি থেকে অনেকের পদত্যাগ, একাংশের বিরোধিতা, নতুন করে অনেককে পদায়নসহ নানা ইস্যুতে বিতর্কিত হয়ে ওঠেন জয়-লেখক। অভিযোগ রয়েছে, কমিটির মেয়াদ পার হলেও তারা সম্মেলন দিতে গড়িমসি শুরু করেন। সম্মেলনের দাবিতে ছাত্রলীগের নানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সরব হয়ে ওঠেন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ছাত্রলীগকে দ্রুত সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার নির্দেশ দেন অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু সভাপতি আল নাহিয়ান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে টালবাহনা শুরু করেন।

দ্রুত সম্মেলন প্রত্যাশীরা গত ১৪ মে তারিখ ঘোষণার দাবি নিয়ে মধুর ক্যান্টিনে আল নাহিয়ান জয় এবং লেখক ভট্টাচার্যের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করেন। এর পরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘটে ছাত্রদলের ‘তথাকথিত’ আগমন। মারামারিতে লিপ্ত হয় দুই সংগঠন, হাওয়া হয়ে যায় ছাত্রলীগের সম্মেলন আলোচনা।

সঠিক সময়ে সম্মেলন না হওয়া এবং এ জন্য পদ ছাড়াই অনেক কর্মীর বিদায়ের আশংকার বিষয়ে গত বুধ এবং বৃহস্পতিবার আল নাহিয়ান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথা বলার জন্য নিউজবাংলার পক্ষ থেকে বার বার তাদের ফোন করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।

ছাত্রলীগ দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যতম আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমানও যথাসময়ে সম্মেলন না হওয়ার কারণে নেতৃত্ব জটের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগে নেতৃত্ব পেতে নিদ্দির্ষ্ট বয়সসীমা এবং ছাত্রত্ব থাকতে হবে। কিন্তু করোনার কারণে নিয়মিত সম্মেলনে ভাটা পড়েছে।’

আগামী সম্মেলনে নেতৃত্ব নির্বাচনে সে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা আলোচনা সাপেক্ষ।’

এ বিভাগের আরো খবর