জেলা ছাত্রদল সভাপতির মৃত্যুর পর ডাকা হরতাল সফল করতে মাঠে নেমেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিলের পাশাপাশি টায়ার জ্বালিয়ে কর্মসূচি সফল করার আহ্বান এসেছে দলটির পক্ষ থেকে।
পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে আহত জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
বুধবার বিকেলে দলটি এই কর্মসূচির পাশাপাশি এক সপ্তাহ শোক পালনের ঘোষণা দেয়। এর পরই কর্মসূচি সফল করতে মিছিল নিয়ে মাঠে নামেন নেতাকর্মীরা।
সন্ধ্যায় ফের মিছিল নিয়ে শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে তারা স্লোগান দেন। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকার দেশজুড়ে যে লোডশেডিং করছে, তার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে রোববার ভোলায় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছোড়ে।
এ সময় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আব্দুর রহিমের মৃত্যু হয়। অন্তত ১০ পুলিশ সদস্যসহ বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর ছিলেন নুরে আলম।
আহত নুরে আলমকে ভোলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে পাঠানো হয় বরিশাল শের-ই বাংলা (শেবাচিম) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নেয়া হয় ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে।
অবস্থার অবনতি হলে রোববার রাতে তাকে গ্রিন রোডের কমফোর্ট হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তিন দিন লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ছাত্রদল সভাপতির মৃত্যুর পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।
জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ জেলাকে পুলিশ আজ লাশের শহরে পরিণত করেছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুর রহিমের মৃত্যুর তিন দিন পর আমরা অরেকজন সহযোদ্ধাকে হারালাম। জেলা ছাত্রদলের সভাপতির মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এই মৃত্যু কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। এই মৃত্যুর জন্য পুলিশই দায়ী।’
তার এই বক্তব্যের কিছুক্ষণ পর আসে হরতাল পালনের ঘোষণা। তবে এই কর্মসূচি ঘিরে কোনো ধরনের অরাজক পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, সে জন্য সতর্ক অবস্থায় আছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিএনপির গোলাম নবী আলমগীর বলেন, ‘এই হরতাল সফল করতে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থাকতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে জনগণকেও এগিয়ে আসতে বলছি।’
ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুর রহিমকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে বলে ফের অভিযোগ করেন জেলা বিএনপির এই শীর্ষ নেতা।