বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সব প্রস্থান বিদায় নয়’

  •    
  • ৩ আগস্ট, ২০২২ ১৪:২৪

কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আকলিমা বেগম বলেন, ‘তার বোন ঘুমিয়ে ছিল বলে কিছুই টের পাননি। সকালে ঘুম ভেঙে বোনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়েছেন। কী কারণে এই ঘটনা ঘটছে তা তদন্ত করা হচ্ছে।’

বেশ কদিন আগেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আত্মহত্যা নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন, লিখেছিলেন আত্মহত্যা নিয়ে বেদনার কথা। প্রায় একই কথা লিখেছেন রাতেও। এর মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সে মানুষটারই ঝুলন্ত মরদেহ মিলল ঘরে।

বরিশাল নগরীর উত্তর মল্লিক রোডের জাহান ম্যানসনের বাসা থেকে বুধবার সকালে ২৫ বছর বয়সী সামসুন্নাহার নিপা নামের এই সাংস্কৃতিক কর্মীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

বোনের সঙ্গে থাকতেন নিপা। নগরীর একটি বেসরকারি ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ পাস করেছেন তিনি। তিনি ছিলেন ‘উদীচী ও বরিশাল নাটক’ এর সদস্য। এ ছাড়া এই সাংস্কৃতিক কর্মী নিয়মিত আবৃত্তিও করতেন বলে জানিয়েছেন উদীচী বরিশালের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরন।

কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আকলিমা বেগম নিউজবাংলাকে নিপার মরদেহ উদ্ধারের তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘তার বোন ঘুমিয়ে ছিল বলে কিছুই টের পাননি। সকালে ঘুম ভেঙে বোনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়েছেন। কী কারণে এই ঘটনা ঘটছে তা তদন্ত করা হচ্ছে।’

তিনি জানান, ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় নিপার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

গলায় ফাঁসের একটি কালো দাগ ছাড়া আর কোনো চিহ্ন নেই। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে বলেও জানিয়েছেন এসআই।

নিপার ফেসবুকে দেখা গেছে, মরদেহ উদ্ধারের ৮ ঘণ্টা আগে সবশেষ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। সেখানে লিখেছেন ‘সব প্রস্থান বিদায় নয়’।

এর আগে ২৫ জুন তার নিজের ৫৯টি ছবি পোস্ট করেছিলেন ফেসবুকে। তার আগের দিন একটি পোস্ট দিয়েছেন নিপা।

ওইদিন ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘পোস্টে দেখলাম একটা ছেলে আত্মহননের পথ বেছে নিয়ে আবার ফেসবুকে পাবলিক পোস্ট করছে। কোনো মানুষই মরতে চায় না। তার পরও ঠিক কতটা যন্ত্রণায় থাকলে এমন কাজ করে যে পরিস্থিতিতে না পড়ে, সে বুঝবে না। পোস্ট কেন করছে ঠিক জানি না, হয়তো তখনো তার বাঁচার ইচ্ছাটা ছিল, হয়তো চেয়েছিল তার যন্ত্রণা কেউ বুঝুক। উনি বেঁচে গেছেন। অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলেছে। স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়েছে। তবে আমার মনে হয় উনি মরে গেলেই আসলে বেঁচে যেত।

‘না তার মানে আমি সবাইকে আত্মহত্যায় উৎসাহ দিচ্ছি না। আমরা মানুষ চলে গেলে আফসোস করতে পারি, বেঁচে থাকার জন্য মোটিভেট করতে পারি, কিন্তু সেই মানুষটার যন্ত্রণা লাঘব করে শান্তিতে বাঁচার পথটুকু বলতে পারি না। উনাকে যারা বাঁচিয়েছে, তারা বড়জোর এক সপ্তাহ পাশে থেকে সাপোর্ট করবে। ব্যস্ত দুনিয়ায় সবাই আবার ব্যস্ত হয়ে পড়বে। উনি আবার যন্ত্রণায় ভুগবে, আবার আত্মহননের পথ খুঁজবে। এর শেষ কোথায়? কেন মানুষ অন্য মানুষের বাঁচার আকুতি ভুলে আত্মহনন কেন করে, সেটার কারণ খুঁজে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে না?’

এ বিষয়ে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে নিশ্চিত করে বলতে পারব।’

এ বিভাগের আরো খবর