পিরোজপুরে এক প্রসূতি নারীর সিজারের সময় পেটের অংশ বেশি কেটে গর্ভে ফুলের অংশ রেখে সেলাই করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় জেলার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে একটি মামলা করেন ওই প্রসূতির স্বামী জসিম খান।
আদালতের বিচারক মো. ইকবাল মাসুম মামলার বিষয়ে পিরোজপুর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্ত করার আদেশ দেন।
নিউজবাংলাকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী এ এস ওমান।
প্রসূতি মনিরা বেগম পিরোজপুর সদর উপজেলার আলামকাঠী এলাকার জসিম খানের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি মুমূর্ষূ অবস্থায় খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অভিযুক্তরা হলেন শহরের আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমের চিকিৎসক শিকদার মাহমুদ এবং ম্যানেজার সঞ্জয় মিস্ত্রী।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জসিম খান তার প্রসূতি স্ত্রী মনিরা বেগমকে নিয়ে ডা. শিকদার মাহমুদের কাছে গেলে তিনি তাদের আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নাসিং হোমে ভর্তি হওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। গত ৮ জুলাই সেখানে ওই নারীর সিজার করেন শিকদার মাহমুদ।
এতে বলা হয়েছে, সিজারের সময়ে প্রসূতির পেট প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কেটে এবং নবজাতকের নাভীর অংশ কেটে সেটি না বেঁধে প্রসূতির গর্ভের ফুলের অংশ পেটের ভেতরে রেখে অপরিষ্কার অবস্থাতেই পেট সেলাই করে ফেলেন শিকদার মাহমুদ। এরপরে ওই নারীকে বাড়ি নিয়ে গেলে কয়েকদিন পরই তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে যান।
আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে ডা. শিকদার মাহমুদকে বিষয়টি জানালে তিনি রোগীকে কোনো চিকিৎসা না দিয়েই পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তির পরামর্শ দেন।
রোগীকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তার অবস্থা আরও গুরুতর হয়। তখন তাকে ওই হাসপাতাল থেকে খুলনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময়ে রোগীকে মোট ১৪ ব্যাগ রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হয়।
খুলনার চিকিৎসকরা রোগীর অবস্থা আশংকাজনক দেখে কয়েকটি টেস্ট দেন পরে তারা দেখতে পান যে গর্ভের ফুলের অংশ পেটের ভেতরে রেখে অপরিষ্কার পেটে সেলাই করা হয়েছে। পরে এ নিয়ে মামলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমের চিকিৎসক শিকদার মাহমুদের মোবাইল ফোনে বার বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আইডিয়াল ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমের পরিচালক এস এম সোহেল বিল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রসূতিকে সিজারের জন্য কোনো রকম চাপ দেয়া হয়নি। বরং আমার প্রতিষ্ঠান ও ডাক্তাররা অপেক্ষা করছিল নরমাল ডেলিভারির জন্য। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।তবে ওই নারীর গর্ভে ফুল কাটা হয়নি, এ বিষয়ে আমরা কিছু জানি না।’
তবে জেলা সিভিল সার্জন ইউসূফ জাকী বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’