কয়েক দিন আগেই শেষ হয়েছে ৬৫ দিনের অবরোধ। সাগরে এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। কিন্তু এ মৌসুমেও জেলেদের জালে দেখা নেই কাঙ্ক্ষিত ইলিশের।
এ অবস্থায় বেশির ভাগ জেলে শূন্য ট্রলার নিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ফিরলেও সোমবার গভীর রাতে অন্তত ৭৫ মণ ইলিশ নিয়ে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে এসেছে একটি ট্রলার।
এফবি সাফওয়ান নামে ওই ট্রলারটির মালিক পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির।
চেয়ারম্যান জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে বাজার সওদা করে পাথরঘাটা বিএফডিসি ঘাট থেকে বঙ্গোপসাগরে যাত্রা করেছিল তার ট্রলারটি। ফিরেছে সোমবার গভীর রাতে। মঙ্গলবার সকালে ট্রলারবোঝাই মাছ পাঠানো হয় বাগেরহাটে। বিক্রি হয়েছে ১৮ লাখ টাকায়।
কোনো ট্রলারই যখন মাছ পাচ্ছে না, তখন আপনার ট্রলারে এত মাছ এলো কীভাবে- এমন প্রশ্নে গোলাম কবির বলেন ‘এই প্রশ্নটি সবাই করছে।’
বিপুল ইলিশ ধরার রহস্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে আমার ট্রলার অন্য ট্রলারগুলোর চেয়ে আধুনিক ও উন্নতমানের। আমার ট্রলারগুলো এমনভাবে তৈরি যে, গভীর সমুদ্রে জেলেরা বিচরণ করতে পারে। আধুনিক ইঞ্জিন সংযোজনের ফলে জেলেরা সমুদ্রের যেকোনো জায়গায় গিয়ে জাল ফেলতে পারে। এ কারণেই আমি অন্যদের চেয়ে বেশি ইলিশ শিকার করতে পারি।’
এফবি সাফওয়ান ট্রলারের মালিক ও পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কবির
এফবি সাফওয়ান ট্রলারের মাঝি দুলাল মিয়া বলেন, ‘আমরা এবার যে মাছ পেয়েছি, তাতে ট্রলার মালিক ও জেলে সবাই মহা খুশি। আসলে আমরা গভীর সমুদ্রে গিয়ে জাল ফেলেছিলাম।’
দুলাল বলেন, ‘জাল টানতেই দেখি ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। মাত্র দুইবার জাল পেতেই যে মাছ পেয়েছি, তাতে ট্রলারে আর মাছ নেয়ার জায়গা ছিল না। ট্রলারভর্তি মাছ নিয়ে ফিরে এসেছি।’
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘জেলেরা মাছ না পাওয়ায় হতাশ হয়েই ফিরে আসছে ঘাটে। এরই মধ্যে পাথরঘাটা উপজেলা চেয়ারম্যানের ট্রলারের জেলেরা ৭৫ মণ ইলিশ পেয়েছে। এটা তো আমাদের জন্য খুশির খবর। মনে হয়, ধীরে ধীরে মাছ ধরা পড়তে শুরু করবে জেলেদের জালে।’
এফবি সাফওয়ান ট্রলার থেকে নামানো ইলিশের একাংশ
পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, ‘উপকূলের কাছাকাছি এখন অনেক কম ইলিশ ধরা পড়ছে। তবে গভীর সমুদ্রে প্রচুর ইলিশ রয়েছে। এসব ইলিশ আকারেও বড়।’