দেশের ৯টি সেতু ও এক মহাসড়কে টোল আদায়ের জন্য ফাস্ট ট্র্যাক লেন বা দ্রুতগতির লেন স্থাপন হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগে এই লেন ব্যবহার করা যানবাহনগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে টোল দিয়ে বাধাহীন সেতু ও মহাসড়কে চলাচল করতে পারবে।
অত্যাধুনিক এই পদ্ধতি জনপ্রিয় করতে এই লেন ব্যবহারকারীদের জন্য টোলের ওপর ১০ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করেছে মন্ত্রণালয়।
প্রাথমিকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা সেতু ও গোমতী সেতু, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব সেতু, নরসিংদীর শহীদ ময়েজউদ্দিন সেতু ও চরসিন্ধুর সেতু, খুলনার খানজাহান আলী সেতু (রুপসা সেতু), কুষ্টিয়ার লালন শাহ সেতু, পটুয়াখালীর পায়রা সেতু ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত টোল প্লাজা (কর্ণফুলী সেতু) এবং হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের আত্রাই টোল প্লাজায় এ সুবিধা পাওয়া যাবে।
স্বয়ংক্রিয় টোল সংগ্রহ ব্যবস্থা বা ইটিসির মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বাধাহীনভাবে যে কোনো যানবাহন টোল দিতে পারে। এর ফলে টোল প্লাজার সামনে যানবাহনগুলোকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় না। ফলে সড়কে যান চলাচলের গতি স্বাভাবিক থাকে। এই সুবিধা থাকলে চালকদের নিজ নিজ যানবাহনে নগদ অর্থ বহনেরও প্রয়োজন পড়ে না।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের টোল ও এক্সেল শাখার উপসচিব ফাহমিদা হক খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূলত চালকদের ইটিসি ব্যবহারে উৎসাহিত করতেই ১০ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়েছে। ২৫ এপ্রিল এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়। ৩০ মে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর ১ জুন থেকে দ্রুতগতির লেন ব্যবহারকারীরা ১০ শতাংশ হারে ছাড় পাচ্ছেন।
‘আগের তুলনায় এখন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। সামনে আরও সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছি।’
টোল ও এক্সেল শাখার হিসাবে, জুন মাসে দ্রুতগতির লেন ব্যবহার করে এই ১০ সেতু ও মহাসড়ক পার হয়েছে ২১ হাজার ৩৬৯টি যানবাহন। তাদের কাছ থেকে আদায় হয়েছে ৪৭ লাখ ৩২ হাজার ৬৬৪ টাকা। এক মাসেই টোল আদায় দেড় গুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। জুলাই মাসে দ্রুতগতির লেন ব্যবহার করে এই ১০ সেতু ও মহাসড়ক পার হয়েছে সর্বমোট ২৪ হাজার ৪০৩টি যানবাহন। তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ৭৫ লাখ ২৮ হাজার ৫০৯ টাকা।
ইটিসির মাধ্যমে টোল দেয়ার নিয়ম
ইটিসির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে টোল দিতে প্রাথমিকভাবে বেসরকারি ব্যাংক ডাচ-বাংলার নেক্সাস-পে অথবা রকেট একাউন্টের টোল কার্ডের মাধ্যমে এই সেবা নেয়া যাচ্ছে। এটি পেতে সংশ্লিষ্ট যানবাহনের নিবন্ধন নম্বরটি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের যেকোনো শাখা, ফাস্ট ট্র্যাক বা নেক্সাস-পে থেকে নিবন্ধন করতে হবে। টোল আদায়ের জন্য একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা থাকতে হবে।
দ্রুতগতির লেনের টোল প্লাজায় থাকা সচল ও কার্যকর রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি আইডেন্টিফিকেশন (আরএফআইডি) ট্যাগের মাধ্যম এই টোল নেয়া হয়।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী এ বিষয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দ্রুতগতির লেন ব্যবহারের বিষয়ে উৎসাহিত করতে আমরা ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছি। আমরা সবার মোবাইল ফোণে এসএমএস পাঠিয়েছি। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছি, টিভিতে স্ক্রলও দিচ্ছি।
‘আমরা জনগণকে ইটিসির বিষয়টি জানাতে চাই। এই বিশেষ লেন ব্যবহার করলে টোলের ওপর সরকার ১০ শতাংশ ছাড় দেবে। এতে ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করি। এখন গাড়ি যা যাচ্ছে, সামনে আরো বেশি যাবে। যেহেতু এই লেনে টোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না তাই প্রচারের ফলে এর ব্যবহারকারী অনেক বাড়বে বলে আশা করছি।’