বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইন্টার্নকে মারধর: আসামি আ.লীগ নেতার ভাতিজা

  •    
  • ২ আগস্ট, ২০২২ ১৯:৫৫

কলেজ প্রশাসন ও হাসপাতাল প্রশাসনের করা দুটি মামলায়ই প্রধান আসামি করা হয়েছে মো. আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে। তিনি সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক সিটি কাউন্সিলর আব্দুল খালিকের ভাতিজা। আব্দুল্লাহ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। তবে দলে তার কোনো পদ নেই। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া দুজনের মধ্যে একজনও ছাত্রলীগের পদদধারী নেতা।

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ও দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার দুটি মামলা হয়েছে। কলেজ প্রশাসন ও হাসপাতাল প্রশাসনের করা দুই মামলায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

দুটি মামলায়ই প্রধান আসামি করা হয়েছে মো. আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে। তিনি সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক সিটি কাউন্সিলর আব্দুল খালিকের ভাতিজা। ওসমানী হাসপাতালের পাশেই তাদের বাসা।

আব্দুল্লাহ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। তবে দলে তার কোনো পদ নেই। মহানগর ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তার ছবি ফেসবুকে ঘুরতে দেখা গেছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া দুজনের মধ্যে একজনও ছাত্রলীগের পদদধারী নেতা।

নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় মঙ্গলবার কতোয়ালি থানায় মামলা করেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ। মো. আব্দুল্লাহর নাম উল্লেখ করে আরও ৩/৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলার বাদী হয়েছেন কলেজ অধ্যক্ষের সচিব মো. মাহমুদুর রশিদ। এই মামলায়ও প্রধান আসামি মো. আব্দুল্লাহ। অপর আসামিরা হলেন ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিদ হাসান রাব্বি, এহসান আহম্মদ, মামুন, সাজন, সুজন ও সামি।

কলেজ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আব্দুল্লাহর নেতৃত্বেই ইন্টার্ন চিকিৎসককে লাঞ্ছিত ও মঙ্গলবার দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা করা হয়।

এ ব্যাপারে মো. আব্দুল্লাহ বা তার চাচা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল খালিকের বক্তব্য জানা যায়নি। আব্দুল খালিক ফোন ধরেননি।

দুই মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কলেজ প্রশাসনের করা মামলায় মোহিদ হাসান রাব্বি ও এহসান আহম্মদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করা মামলার আসামি আব্দুল্লাকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

এদিকে, এসব ঘটনার প্রতিবাদে ধর্মঘট পালন করছেন ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। একই ঘটনায় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন মেডিক্যাল কলেজটির শিক্ষার্থীরাও।

সোমবার রাতে কলেজের দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। আর দায়িত্ব পালনকালে এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক লাঞ্ছিত হন আগের দিন।

প্রতিবাদে সোমবার রাত থেকে হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

হামলার ঘটনায় রাতেই দুজনকে আটক করা ও প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সোমবার রাত ৩টার দিকে পরদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন তারা। তবে মঙ্গলবার দুপুরে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে সমঝোতা না হওয়ায় ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার বিবেল ৫টায় এ ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভও শুরু করেন তারা।

প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে সমঝোতা না হওয়ার কথা জানিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মতিউর রহমান বলেন, ‘হামলাকারী সকল আসামি গ্রেপ্তার এবং শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত আমরা ধর্মঘট চালিয়ে যাব। সেবা দিতে এসে আমরা হামলা ও হয়রানির শিকার হতে রাজী নই।’

দাবি পুরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী অমিত হাসান সানিও। দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার রাত থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাহ অসিম ক্যানেডি বলেন, ‘রোববার হাসপাতালে দায়িত্বরত এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর দুই স্বজন খারাপ ব্যবহার করে। তারা ওই চিকিৎসককে লাঞ্ছিতও করেন। এরপর আমরা লাঞ্চনাকারী একজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেই।

‘এ ঘটনার জেরে সোমবার রাত ৮টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে বহিরাগতরা আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে। এতে দুজন গুরুতর আহত হন। গুরুতর আহত শিক্ষার্থী রুদ্র নাথ ও নাইমুর রহমান ইমন বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’

এর আগেও অনেকবার এমন ঘটনা ঘটেছে জানিয়ে ক্যানেডি বলেন, ‘আগের ঘটনাগুলোর কোনো সুরাহা হয়নি। সব ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। তাই এই ঘটনার সুরাহা না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

বৈঠক শেষে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূইয়া বলেন, ‘আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের সব দাবির সঙ্গে একমত। তাদের দাবি পূরণে আমরা ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছি। তবে সব দাবি পূরণে কিছুটা সময় লাগবে। আমরা তাদের কাছে এই সময়টুকু চেয়েছি।’

এ বিভাগের আরো খবর