রংপুরের পীরগাছায় নিজের মেয়েকে হত্যার পর লাশ মাটিচাপা দেয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আদালতে তোলা হলে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন তিনি।
পীরগাছা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম পলাশ এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, আসামি রফিকুল ইসলামকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, মঙ্গলবার রফিকুলকে আদালতে তোলা হলে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন। এর আগে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানান, বিয়ে ছাড়াই মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় তাকে হত্যা করেছেন।
এ ঘটনা ঘটেছে পীরগাছার বড়বাড়ি নয়াটারীতে।
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান জানান, গত ২৫ জুলাই ৯৯৯ এ কল পেয়ে পুলিশ গিয়ে নয়াটারী এলাকা থেকে নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার কর। সেদিনই জানা যায়, ওই নারীর নাম লিপি খাতুন ও তার বাবার নাম রফিকুল। রফিকুলই মরদেহ শনাক্ত করেন ও পরে থানায় অজ্ঞাতদের নামে হত্যা মামলা করেন।
সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল বলেন, ‘লাশের পরিচয় মেলার পর আমরা অনেকটা অন্ধকারে ছিলাম। কোনো ক্লু পাচ্ছিলাম না। নানা কৌশল অবলম্বন এবং স্থানীয়দের মধ্যে কাজ শুরু করি। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের মোটিভ পেয়ে যাই।
‘কিন্তু সরাসরি অ্যারেস্ট করতে পারছিলাম না। দুদফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর নিশ্চিত হই যে বাদী রফিকুলই নিজের মেয়েকে হত্যা করেছেন। আমরা তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলি এবং তাকে কঠোর নজরদারীতে রাখি।’
আশরাফুল জানান, সোমবার সকালে রফিকুল থানায় আত্মসমর্পণ করেন। তিনি পুলিশকে জানান, মেয়ের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন বলে গত ২২ জুলাই গলায় পা চেপে তাকে হত্যা করেছেন। এরপর লাশ মাটিচাপা দিয়েছেন।
কী কারণে ক্ষুব্ধ ছিলেন জানতে চাইলে পীরগাছা থানার ওসি জানান, রফিকুলের ভাষ্যমতে লিপির বেশ কয়েক বছর আগে বিয়েবিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে বেপরোয়া চলাফেরা করতেন ও অসামাজিক কাজে লিপ্ত ছিলেন তার মেয়ে।
রফিকুলের বরাতে ওসি জানান, লিপিকে নিয়ে গ্রামে কয়েক দফায় সালিশ হয়েছে। এসব কারণে রফিকুল অতিষ্ঠ ছিলেন। সবশেষ কিছুদিন আগে জানতে পারেন বিয়ে ছাড়াই মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মেয়েকে তিনি হত্যা করেন।
লিপি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন কি না জানতে চাইলে ওসি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লাশ যখন আমরা পাই তখন তা ফুলে উঠেছিল। এ কারণে গর্ভবতী ছিলেন কি না বোঝার উপায় ছিল না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’