কেটে ফেলা হয়েছে চুল, পিঠে নির্যাতনের দাগ। অপহরণের পর উদ্ধার হয়ে ফিরে আসলেও কোথায় ছিলেন, কারা অপহরণ করলেন- তার কিছুই জানাতে পারছেন না কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে অপহৃত চার ব্যক্তির দুইজন। বাকি দুইজনের বক্তব্য জানা যায়নি।
বাহারছড়ার মারিশবনিয়ার একটি পাহাড় থেকে সোমবার রাতে তাদের উদ্ধার করে র্যাব ও পুলিশের যৌথ টিম।
উদ্ধার ব্যক্তিরা হলেন আমিনুর রহমান, মো. নুর, মো. ইলিয়াছ ও সৈয়দ আহমদ। তাদের বাড়ি বাহারছড়ার নোয়াখালীপাড়ায়।
র্যাবের ধারণা, একটি রোহিঙ্গা চক্র তাদের অপহরণ করেছে।
গত এক সপ্তাহে ৬ জন অপহরণের শিকার হন। এর মধ্যে ২৯ জুলাই নোয়াখালীপাড়ার মো. মুবিনুল ও মো. নুর নামে দুইজনকে অপহরণের ঘটনায় ৩০ জুলাই টেকনাফ থানায় মামলা হয়।
একই দিন সন্ধ্যায় আমিনুর রহমান ও অজ্ঞাত আরও একজনকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সবশেষ ৩১ জুলাই সকালে ওই এলাকা থেকে মো. ইলিয়াছ ও সৈয়দ আহমদ নামে আরও দুইজন স্থানীয়কে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। এর মধ্যে র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে চারজন উদ্ধার হলেন।
অপহৃত ১৪ বছরের নুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কবে আমি খেলা শেষে বাড়ি ফিরছিলাম। পথ থেকে একদল লোক অস্ত্র দেখিয়ে আমাকে পাহাড়ের দিকে তুলে নিয়ে যায়। নিয়ে মারধর করে আমার মাথার চুল কেটে দেয়।
‘তারপর বাড়িতে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করে। ফোন দিয়ে আমাদের নির্যাতন করা হয়, যাতে আমরা কান্না করি।’
৪৪ বছরের পানচাষি মো. ইলিয়াছ বলেন, ‘কোনো কথা ছাড়াই বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এত করে বুঝালাম, তারা বুঝতে চায় না যে আমি গরিব। টাকা-পয়সা নেয়, মারধর করে ফেলে রাখে।’
চোখ বেঁধে ফেলায় তাদের চিনতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের ভাষায় বুঝতে পারছি তারা রোহিঙ্গা।’
কক্সবাজার র্যাব-১৫ উপ-অধিনায়ক মেজর আরেফিন সিদ্দীকি বলেন, ‘সোমবার রাতে ওই পাহাড়ে অপহৃতদের অবস্থানের খবর পেয়ে র্যাব ও পুলিশের ৮ ঘণ্টার একটি অভিযানে চার অপহৃতকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় ফরিদ আলম নামে অপহরণকারী চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
‘ফরিদকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হবে। উদ্ধার ব্যক্তিদের মঙ্গলবার দুপুরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
বাকি দুইজনের অবস্থান নিশ্চিত হলে উদ্ধার অভিযান চালানো হবে বলেও জানান র্যাব অধিনায়ক।