সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এরপর প্রশাসনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাত পৌনে ৩টার দিকে ধর্মঘট স্থগিত করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।
হামলার ঘটনায় রাত ১টার দিকে ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিদ হাসান রাব্বি ও স্থানীয় বাসিন্দা এহসান আহম্মদকে আটক করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এরপর রাত পৌনে ৩টার দিকে ধর্মঘট ও অবরোধ স্থগিতের ঘোষণা আসে।
কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী অমিত হাসান সানি বলেন, ‘দাবি পূরণে প্রশাসনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছি। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আবার আন্দোলনে নামব।’
নিজেদের দাবি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও তাদের বিচার, কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে হত্যাচেষ্টা মামলা করা, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের দাবি জানিয়েছি আমরা।’
প্রশাসনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও মঙ্গলবার দুপুর ২টা পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করে কাজে যোগ দিয়েছেন বলে জানান ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মতিউর রহমান।
হামলায় আহত শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ছবি: নিউজবাংলা
দুজনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আশা করছি দ্রুত সবাইকে গ্রেপ্তার করতে পারব।’
শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত জানিয়ে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মইনুল হক বলেন, ‘হামলার ঘটনায় আমরা আজকেই থানায় মামলা করব। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায়ও সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এর আগে সোমবার রাত ৮টার দিকে ক্যাম্পাসে হামলার শিকার হন মেডিক্যাল কলেজের দুই শিক্ষার্থী। এর প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দেন হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এ ছাড়া কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
হামলায় আহতরা হলেন শিক্ষার্থী রুদ্র নাথ ও নাইমুর রহমান ইমন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থী শাহ অসিম ক্যানেডি বলেন, ‘রোববার এক ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর দুই স্বজন খারাপ ব্যবহার করে। আমরা তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেই।’
‘এ ঘটনার জেরে সোমবার রাত ৮টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে বহিরাগতরা আমাদের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে। এতে দুজন গুরুতর আহত হন। এর আগেও অনেকবার এমন ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।’
এদিকে হামলার প্রতিবাদে রাত ১টার দিকে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভুইয়াকে নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। প্রায় ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ ছিলেন তিনি।