বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যবিপ্রবি ছাত্রলীগের নেতৃত্বে হত্যা-ডাকাতি মামলার আসামি

  •    
  • ১ আগস্ট, ২০২২ ২২:৫২

২০১৪ সালের ১৪ জুলাই যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাইমুল ইসলাম রিয়াদকে ক্যাম্পাসে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি তানভীর ফয়সাল নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত ১১ সদস্যের আংশিক কমিটির দুইজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।

তাদের মধ্যে ডাকাতি ও হত্যা মামলার আসামিও রয়েছেন। নতুন সাধারণ সম্পাদক তানভীর ফয়সাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নাইমুল ইসলাম রিয়াদ হত্যার চার্জশিটভুক্ত আসামি।

২০১৪ সালের ১৪ জুলাই যশোর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাইমুল ইসলাম রিয়াদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত তিন নম্বর আসামি তানভীর।

গত রোববার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এক বছরের জন্য যবিপ্রবি ছাত্রলীগের ১১ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

এতে সোহেল রানাকে সভাপতি ও তানভীর ফয়সালকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর ছাত্রলীগের এই কমিটি দেয়া হলো।

কমিটিতে চার সহসভাপতি হলেন আফিকুর রহমান অয়ন, নাজমুস সাকিব, মেহেদী হাসান ও আল মামুন সিমন।

তিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান শিহাব, এস এম ইকরামুল কবির দ্বীপ ও নূর মোহাম্মদ টনি।

দুই সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম হৃদয় ও মুরাদ পারভেজ।

পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, বিতর্কিতদের পদ দেয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানতেন না। কমিটি নিয়ে তুমুল সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। একই সঙ্গে সংগঠনের ভেতরে চলছে তোলপাড়, দেখা দিয়েছে বিরোধ।

তাদের অভিযোগ, অনিয়মিত ছাত্র, বিতর্কিত এবং হত্যা ও ডাকাতির মামলার আসামিরা কমিটিতে স্থান পেলেও বাদ পড়েছেন সক্রিয় কর্মীরা। ১১ জনের কমিটিতে অন্তত ৫ জন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত।

২০১৭ সালের ৫ অক্টোবর যবিপ্রবির শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে সংঘবদ্ধ ডাকাতি মামলার এজাহারভুক্ত আসামিও তানভীর ফয়সাল। একই মামলার আরেক আসামি আল মামুন সিমনও পেয়েছেন সহসভাপতির পদ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগ নেতারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী হত্যার মামলায় অভিযুক্ত ফয়সাল এবং হলে ডাকাতি মামলার সিমনকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এমন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়ায় সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১৪ জুলাই দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রিয়াদ ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে খুন হন।

রিয়াদের পরিবার মামলা করলে প্রথমে পুলিশ, পরে সিআইডি তদন্ত করে। আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন তদন্ত কর্মকর্তা।

১১ আসামির তালিকায় তিন নম্বরে আছেন তানভীর ফয়সাল। বর্তমানে এই মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন।

২০১৭ সালের ৫ অক্টোবরে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তখন শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩০০ ফোন, ১০০ ল্যাপটপ, নগদ অর্থ ডাকাতি করা হয়।

ঘটনার তিন দিন পর ৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি সুব্রত বিশ্বাস ২৫ জনের নামে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় ১১ নম্বর আসামি করা হয় তানভীরকে। ১০ নাম্বার আসামি সদ্য ঘোষিত কমিটির সহসভাপতি আল মামুন সিমন।

অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে টানা ৫ বছর ধরে পড়াশোনা করছেন ফয়সাল। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়মিত এই ছাত্র তার জন্মস্থান বাগেরহাটের এক সংসদ সদস্যের হাত ধরেই বাগিয়ে নিয়েছেন সাধারণ সম্পাদকের পদ।

অভিযোগের বিষয়ে তানভীর বলেন, ‘আমার নামে যে হত্যা ও ডাকাতি মামলা রয়েছে, সেই মামলায় জামিনে আছি। আমি তো এখনও আদালতে দোষী প্রমাণ হইনি। রাজনৈতিকভাবেই এসবে আমার নাম জড়ানো হয়েছে। কমিটিতে যারা স্থান পেয়েছে তারা সবাই ছাত্র ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মী। সুন্দর একটি কমিটি হয়েছে।

‘যারা কমিটিতে স্থান পায়নি তারা অপপ্রচার করে যাচ্ছে। কেন্দ্রের নির্দেশে কয়েক দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়া হবে। সেখানে বাদ পড়া ত্যাগী কর্মীদের স্থান দেয়া হবে।’

এ বিষয়ে সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ছাত্ররাজনীতি করি। তার ফল হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতারা আমাকে মূল্যায়ন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি হয়নি, ফলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা রয়েছে। ক্যাম্পাসে অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে ভালো পদ পাওয়ার যোগ্য। ত্যাগী ও পরিশ্রমী কর্মীদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং হল কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’

কমিটির অভিযোগ নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি সোহেল।

হত্যা ও ডাকাতির মামলার আসামিকে কেন এতো বড় পদ দেয়া হলো সে বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একাধিকবার কল করেও পাওয়া যায়নি।

২০১৯ সালের ২ নভেম্বর যবিপ্রবি ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ২০১৪ সালের ১৬ মে ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে সুব্রত বিশ্বাসকে সভাপতি ও এসএম শামীম হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের ৫৪ সদস্যের এক বছরের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর আর কোন কমিটি হয়নি।

এ বিভাগের আরো খবর