আগামী ৯ আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। এ উপলক্ষে গত ১৯ জুলাই তথ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা একটি পরিপত্রে গণমাধ্যমসহ সুশীল সমাজকে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ব্যবহার না করতে বলা হয়।
এবার ওই পরিপত্রের বিরোধিতা করে এটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী নিয়ে কাজ করা সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি।
সোমবার দুপুরে কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ানের স্বাক্ষর করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবিটি জানানো হয়।
বাংলাদেশকে একটি বহু জাতি ধর্ম ও সংস্কৃতির দেশ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর সময় আদিবাসীদের দাবি উপেক্ষা করে উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায় শব্দগুলো সন্নিবেশ করা হয়েছে।
‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ শব্দটিকে অপমানজনক উল্লেখ করে দাবি করা হয়- কোনো জাতিকে ‘ক্ষুদ্র’ বলা সেই জাতিগোষ্ঠীর লোকজনকে চরমভাবে হেয় করার শামিল এবং সংবিধান পরিপন্থি।
বলা হয়- ‘সংখ্যায় কম হোক কিংবা বেশি, কোনো জাতিগোষ্ঠী কখনও ক্ষুদ্র বা বৃহৎ হিসেবে পরিচিত হতে পারে না। কোনো জাতিগোষ্ঠী কী নামে পরিচিত হবে, তা আইন দিয়েও নির্ধারণ করা যায় না। আত্মপরিচিতিই যেকোনো জাতিগোষ্ঠীর পরিচয় নির্ধারণের মানদণ্ড।’
তথ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্রকে অপমানজনক আখ্যায়িত করে আরও বলা হয়- ‘এই পরিপত্র সংবিধান পরিপন্থি এবং দেশের মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন নাগরিক সমাজ তথা সমস্ত আদিবাসী জনগণের জন্য চরম অপমানজনক। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ের এই পরিপত্রের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওই পরিপত্রের মাধ্যমে সংবিধান স্বীকৃত বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকেও খর্ব করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’ শব্দটির বদলে ‘আদিবাসী’ শব্দটিকে সমর্থন করে বলা হয়- ‘আন্তর্জাতিক অনেক চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকার অনুস্বাক্ষর করেছে। সেগুলোর মধ্যে আইএলও কনভেনশন-১০৭ ও জীববৈচিত্র্য চুক্তি-১৯৯২ উল্লেখযোগ্য। সেসব চুক্তিতে আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।’
এ অবস্থায় পরিপত্রের মাধ্যমে ‘আদিবাসী’ শব্দটি টকশো কিংবা মিডিয়ায় ব্যবহার না করার নির্দেশনা অবান্তর বলে দাবি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি।