সরকারবিরোধী যে আন্দোলনের পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপি আগাচ্ছে, তাতে রাজনীতিতে অখ্যাত জাতীয় দল পিপলস লীগ নামে দুটি দলকেও পাশে চাইছে দলটি।
এর অংশ হিসেবে দল দুটির সঙ্গে সংলাপে বসলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংলাপ হয়।
বৈঠকে জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা-এর নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, তিন ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুল আহাদ, জাফর হোসেন ও সারোয়ার আলম, তিন যুগ্ম মহাসচিব নুরুল করিম, মাসুদ আহমেদ, জিয়াউল হক, সদস্যসচিব সাইফুল আলম রুমেল, সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক বেলায়েত হোসেন শামীম ও ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম।
বিএনপির পক্ষে মির্জা ফখরুল ছাড়াও ছিলেন স্থায়ী কমিটি সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
পরে পিপলস লীগের সভাপতি গরীবে নেওয়াজের নেতৃত্বে দলটির নেতারা বিএনপির সঙ্গে বসেন।
সরকারবিরোধী বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলতে গত ২৪ মে থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করছে বিএনপি। তবে মাঝখানে বন্যার কারণে স্থগিত ছিল আলোচনা।
এখন পর্যন্ত মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, জোনায়েদ সাকির গণসংহতি আন্দোলন, জোটের শরিক অলি আহমদের এলডিপি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (একাংশ) সহ ২০টিরও বেশি দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন ফখরুল।
সংলাপ শেষে মির্জা ফখরুল সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘অনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা দখল করে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই ক্ষমতা দখল করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা দলীয়করণ করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশের রাজনীতিকে তারা একদলীয় শাসনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই সরকারের সরে যাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করার জন্য সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে আমরা জনতার ঐক্য গড়ে তুলতে চাই। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। অনেকগুলো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলেছি।
‘আমরা বিশ্বাস করি রাজনৈতিক দল, ব্যক্তিত্ব এই ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করে আমরা সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারব।’
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারকে এখনই পদত্যাগ করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের সকল আশা আকাঙ্ক্ষাকে তারা ধ্বংস করেছে। এই সরকাররে পদত্যাগের মধ্য দিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তাদের মাধ্যমে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য সংসদ গঠন হবে।’
জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিএনপির সঙ্গে আমাদের সংলাপ হয়েছে। নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠায় আমরা বিএনপির সঙ্গে একমত। এ দাবিসহ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আসার জন্য যুগপৎভাবে তার আমরা একমত হয়েছি।’
পিপলস লীগের সভাপতি গরীবে নেওয়াজ বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব বলেছেন কী কারণে এই সংলাপ। আমরা চাই একটা সঠিক নির্বাচন হোক। আমার মতে, এই সরকার আর চলতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে আমরা যাব না। সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎভাবে আন্দোলনের জন্য আমরা থাকব।’