চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে নেয়া প্রকল্পগুলোকে কার্যকর করতে অবৈধ দখল উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
বলেছেন, খাল দখল করে ভবন বানানো, দোকানপাট গড়ে তোলায় লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হচ্ছেন। কিছু মানুষের জন্য অন্যদের জীবন অতিষ্ঠ হতে পারে না। তাই অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে হবে।
সচিবালয়ে রোববার চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নেয়া পদক্ষেপের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় মন্ত্রী সরকারি প্রকল্পে খরচ কমাতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রাম দেশের ইকোনমিক হাব হিসেবে পরিচিত। এই শহরটি দেশের আইডল সিটি হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। দেশের অর্থনীতির অন্যতম এই শহরকে কোনোভাবেই অবমূল্যায়ন করার উপায় নেই।
‘চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে যেসব প্রকল্প নেয়া হয়েছে, সেগুলো কতটা কার্যকর হয়েছে তা দেখার প্রয়োজন রয়েছে। যদি কার্যকর না হয়, অথবা যাচাই-বাছাই না করে গ্রহণ করা হয় তবে সেটি হবে অত্যন্ত দুঃখজনক।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা খাল দখল করে অবৈধভাবে বিল্ডিং বানিয়ে পানির প্রবাহ বন্ধ করে রেখেছেন। খালের ওপর দোকানপাট বানিয়েছেন। এগুলোর কারণে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। সবাইকে সচেতন হতে হবে। কিছু মানুষের জন্য কোটি কোটি মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হতে পারে না। এই খাল দখলমুক্ত করতে হবে।’
তাজুল ইসলাম জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল দখলমুক্ত করতে, অন্য যেকোনো সমস্যা সমাধানে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সব পক্ষকে নিয়ে সভা করে সমাধানের নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে।
বলেন, ‘সমস্যা একবারে নিরসন হয়েছে এমনটি দাবি করা যাবে না। তবে অগ্রগতি হয়নি এটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই।’
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দায়িত্বে চিরকাল থাকব না, আজ মন্ত্রী বা সচিব বা বড় কোনো পদে আছি; কালকে নাও থাকতে পারি। কিন্তু আমরা যদি আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করি তাহলে দেশটাতে পরিবর্তন আসবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উন্নত-সমৃদ্ধ সুন্দর একটি দেশ পাবে।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও দেশের বাইরে নানাবিধ কাজে ব্যস্ত থাকেন। অভ্যন্তরীণ চাপ কমাতে মন্ত্রী-সচিবসহ সংশ্লিষ্ট জনবল নিয়োগ করা আছে দায়িত্ব পালন করার জন্য। পদ-পদবি নেবেন আর কেউ দায়িত্ব নেবেন না, কাজ করবেন না এটা তো হতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতার সমস্যা চট্টগ্রামের বড় একটি সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী নিজে সময়ে সময়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়াও হয়েছে। এই সমস্যার পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যা সমাধানে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। সরকারের অনেক সফলতাও আছে।
‘বর্জ্য সমস্যা বর্তমানে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গৃহস্থালি বর্জ্যের পাশাপাশি ইন্ডাস্ট্রিয়াল বর্জ্য, মেডিক্যাল, নির্মাণসামগ্রীর বর্জ্যসহ অন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। আর তা হলো বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন। খুব শিগগিরই ঢাকা, গাজীপুর এবং চট্টগ্রামসহ অন্যান্য সিটি করপোরেশনগুলোতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে।’