আওয়ামী লীগ সরকারের লুটেরা এমপি-মন্ত্রীদের পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দেবে দেশের মানুষ। এরপর জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিদ্যুতের লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ঢাকা জেলার বিক্ষোভ সমাবেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে এমনটি বলেন দলটির নির্বাহী পরিষদ সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘সরকার ও তার মন্ত্রী-এমপিরা লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাচার করে দেশকে অর্থশূন্য করে দিয়েছেন। এর মাধ্যমে তারা জনগণের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দিয়েছেন। শেখ হাসিনা সরকার জনগণের শান্তি ও মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। এই সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করেছে, যার প্রমাণ সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ও দেশের বিচারব্যবস্থা।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ আপনাদের এমপি-মন্ত্রীদের পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দেবে। এরপর জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতনের জন্য আপনারা প্রস্তুত হোন৷’
আওয়ামী লীগ জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, এই সেতু ভেঙে পড়ে যাবে- এই ধরনের বক্তব্য রাখায় খালেদা জিয়ার প্রতি সম্প্রতি ক্ষোভ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১৮ মে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের দলীয় এক আলোচনায় এমনটি জানান সরকারপ্রধান।
খালেদা জিয়ার উক্তি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বলেছে, স্প্যানগুলো যে বসাচ্ছে, সেটা ছিল তার কাছে জোড়াতালি দেয়া। পদ্মা সেতু বানাচ্ছে, তাতে চড়া যাবে না, চড়লে সেটা ভেঙে যাবে। তার সঙ্গে তার কিছু দোসররা। তাদের কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে পদ্মা নদীতে টুস করে ফেলে দেয়া উচিত।’
নানা বক্তব্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতুবিরোধীদের সেতুতে নিয়ে চোবানোর কথাও বলেন।
এদিকে, বিএনপির সভায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, দেশের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে কিন্তু সরকার তা দূর করতে পারছে না।
সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণের কল্যাণ করবেন কথা দিয়ে, জোর করে ক্ষমতা নিয়েছেন। এখন যখন মানুষ কষ্টে আছে আপনি কষ্ট দূর করতে পারছেন না। প্রতিনিয়ত দ্রব্যমূল্যে বাড়ছে। নিম্ন আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে।
‘হালাল উপার্জন করে সংসার চালাতে পারছে না অধিকাংশ মানুষ। শুধু যারা হারাম উপার্জন করে এবং এ সরকারের সুবিধাভোগী তারা শুধু আরামে আছে। গণমানুষের ভোগান্তি দূর করতে দরকার জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার,’ যোগ করেন তিনি।
এবার কোনোমতেই ভোট দুর্নীতি করতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, গণমানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে আমাদের স্থায়ী সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য দরকার জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার। আর সে রকম কোনো সরকার এ দেশে প্রতিষ্ঠিত হবে না যদি বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকে। তারা ক্ষমতায় থেকে ভোট ডাকাতি করেছে। এবার তারা আবারও ভোট লুট করতে চায়। এমন কোনো কিছুই করতে দেয়া হবে না। কোনোমতেই না।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন। এ সময় দলের ঢাকা জেলার নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।