বরগুনায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বরগুনা পৌরশহরের ধর্মতলা মোড়ে এসব ঘটনা ঘটে। এ সময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলার চেষ্টা হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে, তবে শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বরগুনা জেলা স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি উত্তম কর্মকার বলেন, ‘সাড়ে ৮টার দিকে ছাত্রলীগের শতাধিক তরুণ লাঠিসোটা হাতে মিছিল নিয়ে শহরের ধর্মতলা মোড়ে আসেন। তারা দোকানপাট ভাঙচুরের চেষ্টা করলে ব্যবসায়ীরা সব বন্ধ করে দেন। পরে তারা ধর্মতলা গলিতে রাখা মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও কয়েকজনকে মারধর করেন।
‘এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল কবির রেজার কর্মীরা ধাওয়া দিলে হামলকারীরা ইটপাটকেল ছুড়তে ছুড়তে বাজার সড়ক ধরে পশ্চিম দিকে চলে যান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয় গ্রুপকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’
এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানান উত্তম কর্মকার।
ছাত্রলীগ কর্মী সুমন মিয়া বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল নেতাকর্মীদের নিয়ে শহরের ধর্মতলা গলির রঙধনু ক্লিনিকের সামনে অবস্থান করছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সবুজ মোল্লা সমর্থিত ছাত্রলীগের শতাধিক কর্মী লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র হাতে মিছিল নিয়ে ধর্মতলা মোড়ে এসে হামলা চালায়। এ সময় তারা অন্তত ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও দোকানপাটে হামলার চেষ্টা চালায়।
‘তারা রেজাউলের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তার অনুসারীরা হামলাকারীদের ধাওয়া করে। ধাওয়ায় তারা পিছু হটে শহরের বাজার সড়কে অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। রেজাগ্রুপের কর্মীরাও ইট পাটকেল ছুড়ে হামলাকারীদের ধাওয়া করে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রলে আনে।’
জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রেজাউল বলেন, ‘ছাত্রলীগ পরিচয়দানকারী কিছু জামায়াত-শিবির এবং পদবঞ্চিত বিবাহিত ও বিতর্কিত কিছু সন্ত্রাসী ধর্মতলা এলাকায় লাঠিসোটাসহ মিছিল নিয়ে এসে সাধারণ ব্যবসায়ীদের দোকানপাট ভাঙুচরের চেষ্টা চালায়।
‘ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা ও পথচারীদের সুরক্ষায় ছাত্রলীগ কর্মীরা ওই সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। আমি পুলিশকে জানালে তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়। এ ঘটনায় আমার কেউ আহত হয়নি।’
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মো. সবুজ মোল্লা বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা চলছে। সন্ধ্যায় তারা শহরে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করেছে। হামলাকারীরা আমার গ্রুপের নয়। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছি।’
বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আহম্মেদ বলেন, ‘শহরের পুলিশের নিয়মিত টহল ছিল। আমরা পরিস্থিতি তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। শহরের অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে।’