বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লোডশেডিংয়ে চালের দাম বাড়ার শঙ্কা

  •    
  • ৩০ জুলাই, ২০২২ ২২:২২

বাংলাদেশ অটো, মেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহসভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে লোডশেডিং বেড়েছে। এতে আমাদের উৎপাদন খরচ প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে। বহু মেশিনপত্র নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে ধানের সরবরাহ খুবই কম। মজুতদাররাও ধানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।’

দেশের শীর্ষ ধান উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুর। এই জেলার ধান ও চাল দেশের অন্য জেলায়ও সরবরাহ করা হয়। আমন মৌসুম শেষে বাজারে নতুন ধান ওঠার কথা থাকলেও দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। বাজারে পর্যাপ্ত ধান পাচ্ছেন না মিল মালিকরা।

এর মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে জেলার মিলগুলোতে ধান থেকে চালে রূপান্তর খরচ ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে। আর ধানের জোগানও কমে যাওয়ায় অন্যান্য মৌসুমে মিলগুলোতে যে পরিমাণ চাল রূপান্তর করা হতো বর্তমানে তার চেয়ে ৫০ থেকে ৫৮ শতাংশ কম হচ্ছে। এ কারণে বাজারে চালের দাম বাড়ার শঙ্কায় আছেন ব্যবসায়ীরা।

দিনাজপুরে সবচেয়ে বড় চালের বাজার হিসেবে পরিচিত বাহাদুর বাজার এনএ মার্কেট। সেই মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০, আঠাশ জাতের চাল ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০, ঊনত্রিশ চাল ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০, সুমন স্বর্ণ ২ হাজার ৪০০ থেকে ২ হাজার ৫০০, গুটি স্বর্ণ ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মিলার ও চাল ব্যবসায়ীরা জানান, চলতি জুলাইয়ের প্রথম থেকে বাজারের চালের দাম একই অবস্থায় রয়েছে। সামনে চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কার নেপথ্যে তারা নানা কারণ দেখছেন।

এর মধ্যে লোডশেডিংয়ের ফলে ধান থেকে চালের রূপান্তরে প্রতিটি মিলে কমপক্ষে ২০ শতাংশ ব্যয় বেড়েছে। বাজারে আমন মৌসুমের ধান প্রায় শেষের দিকে। যে ধান বাজারে উঠছে সেসবের দাম মজুতদাররা বাড়িয়ে দিচ্ছেন।

এদিকে ভারত থেকে যেসব চাল আমদানি হচ্ছে, সেগুলোর ডলারের পরিশোধ মূল্য বেড়েছে ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ।

ধানের জোগান কম থাকায় অন্য মৌসুমের তুলনায় এই সময়ে চাল উৎপাদন ৫০ থেকে ৫৮ শতাংশ কমে গেছে

চাল ব্যবসায়ী আলাল বেপারি জানান, চলছে আমন মৌসুম, তার ওপর চাল আমদানি হচ্ছে। এই অবস্থায় বাজারে চালের দাম কমার কথা। কিন্তু বাজারে ১০ দিন আগের তুলনায় চালের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা বস্তাপ্রতি বেড়েছে। তার ওপর বাজারে একেবারেই ক্রেতা নেই।

দিনাজপুর চাল ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আজগার আলী বলেন, ‘যেহেতু চাল আমদানি হচ্ছে, তাই দেশের চালের দাম কমার কথা। এই সময়ে চালের দাম না কমলেও স্থিতিশীল রয়েছে।’

মিল মালিকরা জানান, দিনাজপুরে চাতালের সংখ্যা দুই হাজার। এর মধ্যে ৩০০টি অটো রাইস মিল। এসব মিল থেকে প্রতিদিন ধানের মৌসুমে সাত-আট হাজার টন চাল হয়। বর্তমানে বাজারে ধানের আমদানি নেই। তাই মিলগুলো প্রতিদিন তিন-চার হাজার টন চাল উৎপাদন করছে। ফলে অন্য মৌসুমের তুলনায় বর্তমানে ধান থেকে চালের রূপান্তর কমেছে ৫০ থেকে ৫৮ শতাংশ।

প্রতিটি অটো রাইস মিলে ধান থেকে চাল করায় ১৫ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে মিলগুলো অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকছে। ফলে চালের জোগান কমেছে।

এ ছাড়া লোডশেডিংয়ের কারণে মেশিনপত্রও নষ্ট হচ্ছে। এই খরচ চালের জোগানের ওপর পড়ছে। এতে চালের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ২০ শতাংশ।

বাংলাদেশ অটো, মেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতির সহসভাপতি সহিদুর রহমান পাটোয়ারী মোহন বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে লোডশেডিং বেড়েছে। এতে আমাদের উৎপাদন খরচ প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে। বহু মেশিনপত্র নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে ধানের সরবরাহ খুবই কম। মজুতদারাও ধানের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

‘সরকার ভারত থেকে চাল আমদানির অনুমতি দিলেও সেখানকার বাজারের চালের দাম গত বছরের তুলনায় কমলেও ডলারের মূল্য অনেক বেড়েছে। চাল আমদানি করলে দেশের চালের দামের চেয়ে ভারতীয় চালে অনেক বেশি খরচ হচ্ছে। এ অবস্থায় অনেক আমদানিকারক চাল আমদানি করছেন না বা করলেও কম করছেন।’

তিনি বলেন, ‘আশঙ্কা করা হচ্ছে চালের দাম বেড়ে যেতে পারে। আমরা চাই, কোনোভাবেই যেন চালের দাম না বাড়ে। তাই কীভাবে ডলারের পরিশোধ মূল্য এবং বিদ্যুতের লোডশেডিং কমিয়ে আনা যায় তা সরকারকে আরও বিচক্ষণতার সঙ্গে দেখতে হবে।’

দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কামাল হোসেন বলেন, ‘ডলারের মূল্য প্রতিনিয়তই ওঠানামা করে। চাল আমদানির অনুমতি নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য দেয়া হয়েছে। আমদানিকারকরা যেন চাল আমদানি করেন, সে জন্য তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর