বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পানির অভাবে পাটের জাগ নিয়ে দুশ্চিন্তা কৃষকের

  •    
  • ২৯ জুলাই, ২০২২ ১৬:০০

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. হজরত আলী বলেন, ‘পাট চাষ এবার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। মাঠে পাটের অবস্থাও ভালো। এখন পাট কাটার সময় চলছে। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে কৃষকরা পাটের জাগ দেয়া নিয়ে হতাশায় পড়েছেন।’

অনুকূল আবহাওয়ায় ফরিদপুরে ভালো পাটের ফলন ভালো হলেও চলতি বছর পাটের জাগ দেয়া নিয়ে বিপাকে চাষিরা।

বর্ষাকালেও তীব্র তাপদাহ ও ভারি বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে মাঠেই শুকিয়ে যাচ্ছে পাট। ঠিক সময়ে জাগ দিতে না পারলে লোকসানে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে নিচু জমিতে মাটি চাপা দিয়ে পাটে জাগ দিচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, এ বছর উপজেলার আটটি ইউনিয়নে মোট ১৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। গত বছর আবাদ হয়েছিল ১২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে।

কৃষকরা বলছেন, এ বছর ফসলে রোগবালাই খুব একটা না থাকায় পাট চাষ ভালো হয়েছে। দামও আগের চেয়ে মোটামুটি ভালো। এতে ভালো লাভের আশা করছেন তারা।

তবে বৃষ্টি না হওয়ায় খাল-বিলসহ বিভিন্ন ডোবা ও নালায় পর্যাপ্ত পানি নেই। এ কারণে পাট কাটতে পারছেন না তারা। কেউ কেউ ভারি বৃষ্টিপাতে ডোবা-নালা পানিতে ভরাটের আশায় পাট কাটলে সেগুলো জাগ দিতে না পেরে মাঠেই শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে মাটি চাপা দিয়ে জাগের ব্যবস্থা করছেন তারা।

সরেজমিন জেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, বেশির ভাগ জমির পাট কাটা শুরু হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠে তেমন পানি জমেনি। এ ছাড়া জমি থেকে নদী বা খাল অনেক দূরে হওয়ায় পাট নেয়া কষ্টকর হচ্ছে তাদের।

অনেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নসিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোভ্যানে বোঝাই করে নদী বা খালে নিয়ে যাচ্ছেন পাট। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাই অনেকেই নিচু জমিতে মাটি চাপা দিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন।

এ সময় কয়েকজন কৃষক জানান, মাছ চাষ করায় খালের অনেক জায়গায় পাট জাগ দিতে দিচ্ছে না প্রভাবশালী মহল। তাই অনেক জমির পাট ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে মাঠে জলাবদ্ধতা হলে পুরোদমে পাট কাটা শুরু হবে বলেও জানান তারা।

সালথার কৃষক হায়দার মাতুব্বর বলেন, ‘এ বছর পাটের ফলন ভালো হলেও পানির অভাবে জাগ দিতে পারছি না। এতে চরম বিপাকে পড়েছি।’

মধুখালী পৌরসভার ভাটিকান্দি মথুরাপুর গ্রামের কৃষক মন্নু মৃধা বলেন, ‘এ বছর এক একর জমিতে পাট চাষ করেছি। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছি না। মাটির ওপর কলার পাতা দিয়ে ঢেকে রেখেছি। মেশিনে সেচ দিয়ে পানি দিতে হবে। এটি অনেক ব্যয়বহুল।’

একই এলাকার আকরাম হোসেন বলেন, ‘বাড়ির পাশে সামান্য কাদা পানিতে কোনো রকম চুবিয়ে রেখেছি পাট।’

নগরকান্দার কৃষক পান্নু শেখ বলেন, ‘পানির অভাবে জাগ দিতে না পেরে বৃষ্টির অপেক্ষায় জমিতেই রেখে দিয়েছি পাট।’

উপজেলা উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা আব্দুল বারি বলেন, ‘জেলায় বিজেআরআই-৮ এবং রবি-১ জাতের পাটের বেশি আবাদ হয়েছে। রবি-১ জাতে ফলন বেশি ও পাট ভালো হওয়ায় কৃষকের চাহিদা বেশি। তবে জাগ দিতে না পারলে কৃষক পাট চাষে আগ্রহ হারাবেন।’

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. হজরত আলী বলেন, ‘পাট চাষ এবার লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। মাঠে পাটের অবস্থাও ভালো। এখন পাট কাটার সময় চলছে। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে কৃষক পাট নিয়ে হতাশায় পড়েছেন।

‘এ ছাড়া বৃষ্টির অভাবে জমিতে পর্যাপ্ত রস না থাকায় পাট শুকিয়েও যাচ্ছে। ভারি বৃষ্টি না হলে খাল-বিলে পানি জমবে না। সে ক্ষেত্রে কৃষকদের সেচ দিয়ে জাগ দিতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর