বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পেট ফেটে জন্ম নেয়া শিশুটির ঠিকানা ‘ছোটমণি নিবাস’

  •    
  • ২৯ জুলাই, ২০২২ ১৩:২০

সমাজসেবা অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপপরিচালক আবু আব্দুল্লাহ মো. ওয়ালী উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই নিবাসে সর্বোচ্চ যত্ন সহকারে শিশুদের লালন-পালন করা হয়। বাবা-মা না থাকা ও অন্য অভিভাবকদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় সেখানেই শিশুটি সবচেয়ে ভালো থাকবে।’

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেয়া সেই শিশুটিকে রাজধানীর আজিমপুরে অবস্থিত ‘ছোটমণি নিবাসে’ পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে শিশুটিকে সেখানে পাঠায় জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড।

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শিশুর চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য সচিব ডা. নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘শিশুটি জন্ডিস থেকে সেরে উঠেছে। শ্বাসকষ্ট, বুক ও ডান হাতের ফ্র্যাকচার পুরোপুরি ভালো হয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ায় ময়মনসিংহ জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড ও শিশুটির অভিভাবকের মতামতের ভিত্তিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ওই নিবাসে পাঠানো হয়েছে।’

শিশুটিকে প্রথমে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কথা থাকলেও তাদের আর্থিক অবস্থা স্বচ্ছল না হওয়ায় তাকে নিবাসে পাঠানো হয়েছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপপরিচালক আবু আব্দুল্লাহ মো. ওয়ালী উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই নিবাসে সর্বোচ্চ যত্ন সহকারে শিশুদের লালন-পালন করা হয়। বাবা-মা না থাকা ও অন্য অভিভাবকদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় সেখানেই শিশুটি সবচেয়ে ভালো থাকবে। তবে, যখন ইচ্ছে শিশুর দাদা-দাদি তাকে দেখে আসতে পারবেন।’

নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু বলেন, ‘নাতনির নাম রাখা হয়েছে ফাতেমা। তাকে প্রথমে আমাদের কাছে রাখার জন্য বোর্ডে জানিয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো না। পরে সবাই বুঝিয়ে বলেছে, ওইখানে থাকলে আমার নাতনি বেশি ভালো থাকবে- এ জন্য রাজি হয়েছি। আমার নাতনি ভালো থাকুক সেটাই চাই। নাতনির জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’

ময়মনসিংহ জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর থেকে সার্বক্ষণিক শিশুটির খোঁজখবর নেয়াসহ সবধরনের সহযোগীতা করা হয়েছে। ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে শিশুর জন্য অলৌকিক ঘটনা। শিশুটি সবসময় সুস্থ থাকুক, ভালো থাকুক।’

গত ১৬ জুলাই বিকেলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান উপজেলার রায়মনি এলাকার ৪২ বছরের জাহাঙ্গীর আলম, তার ৩২ বছর বয়সী স্ত্রী রত্না বেগম ও তাদের ৬ বছর বয়সী মেয়ে সানজিদা আক্তার।

ত্রিশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল আমিন স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, দ্রুতগতির ট্রাকটি ময়মনসিংহের দিকে আসছিল। বেলা সোয়া ৩টার দিকে ত্রিশালের কোর্ট বিল্ডিং এলাকা পর্যন্ত আসতেই সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওই দম্পতিসহ তাদের কন্যাশিশুকে চাপা দেয় ট্রাকটি।

এতে ঘটনাস্থলেই স্বামী নিহত হন। আর মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা অন্তঃসত্ত্বা রত্নার পেট চিড়ে ভূমিষ্ঠ হয় গর্ভে থাকা কন্যাশিশু।

এ সময় স্থানীয়রা নিহত দম্পতির আহত সন্তান সানজিদা ও সদ্যোজাত কন্যাকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সানজিদারও মৃত্যু হয়। সদ্যোজাত শিশুটির ডান হাতের দুটি হাড় ভেঙে গেলেও সে বেঁচে যায়।

এ ঘটনায় নিহত জাহাঙ্গীরের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। গত ১৮ জুলাই রাতে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে চাপা দেয়া ট্রাকের চালক রাজু আহমেদ শিপনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র‍্যাব।

পরদিন রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ‘গ্রেপ্তারের পর শিপন স্বীকার করেছেন, দুর্ঘটনার সময় তার সহকারী ঘুমাচ্ছিলেন। টানা ট্রাক চালানোর কারণে তিনিও ছিলেন ক্লান্ত। আর পেছন থেকে একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে, বাঁয়ে চাপাতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।’

১৯ জুলাই সন্ধ্যায় চালক শিপনকে ত্রিশাল থানায় হস্তান্তর করে র‍্যাব। পরদিন বিকেলে তার ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে ময়মনসিংহ মুখ্য বিচারিক ৩ নম্বর আমলি আদালতে তোলে পুলিশ। এ সময় বিচারক মো. তাজুল ইসলাম সোহাগ দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর