বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পেট ফেটে জন্ম নেয়া শিশুটি যাচ্ছে ঢাকার ‘ছোটমণি নিবাসে’

  •    
  • ২৯ জুলাই, ২০২২ ১২:৪৭

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিশুটি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। এ জন্য অভিভাবকের হাতে তুলে দিতে গত দুই দিন একাধিক সভা করা হয়। দাদা-দাদির সংসারে শিশুটিকে লালনপালনের উপযুক্ত কোনো লোক নেই। এ ছাড়া বাড়ির উপযুক্ত পরিবেশও নেই। এ জন্য শিশুর অভিভাবকসহ বোর্ডের মতামতের ভিত্তিতে শিশুকে ঢাকার ছোটমণি নিবাসে পাঠানোর সীদ্ধান্ত হয়।’

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় মায়ের পেট ফেটে জন্ম নেয়া সেই শিশুটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ঠাঁই হচ্ছে রাজধানীর আজিমপুরে অবস্থিত ‘ছোটমণি নিবাসে’।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে শুক্রবার কন্যাশিশুটিকে সেখানে পাঠানোর কথা রয়েছে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের।

ময়মনসিংহ জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শিশুটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর না করার কারণ জানিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘শিশুটি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। এ জন্য অভিভাবকের হাতে তুলে দিতে গত দুই দিন একাধিক সভা করা হয়। দাদা-দাদির সংসারে শিশুটিকে লালন পালনের উপযুক্ত কোনো লোক নেই।

‘এ ছাড়া বাড়ির উপযুক্ত পরিবেশও নেই। এ জন্য শিশুর অভিভাবকসহ বোর্ডের মতামতের ভিত্তিতে শিশুকে ঢাকার ছোটমণি নিবাসে পাঠানোর সীদ্ধান্ত হয়।’

সমাজসেবা কার্যালয় ময়মনসিংহের উপপরিচালক আবু আব্দুল্লাহ মো. ওয়ালী উল্লাহ বলেন, ‘সমাজসেবা অধিদপ্তর পরিচালিত ওই নিবাসে থাকলে আগামী ৬ বছর পর্যন্ত শিশুটির থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসা নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না। তবে শিশুকে কেউ দত্তক নিতে চাইলে আদালতের মাধ্যমে নিতে হবে।’

নবজাতকের দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিশুকে প্রথমে আমাদের কাছে রাখার জন্য বোর্ডে জানিয়েছিলাম। পরে সবাই বুঝিয়ে বলেছে, ওইখানে থাকলে আমার নাতনি বেশি ভালো থাকবে- এ জন্য রাজি হয়েছি। মাঝেমধ্যে নাতনিকে গিয়ে দেখে আসব। আমার নাতনির জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’

গত ১৬ জুলাই বিকেলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান উপজেলার রায়মনি এলাকার ৪২ বছরের জাহাঙ্গীর আলম, তার ৩২ বছর বয়সী স্ত্রী রত্না বেগম ও তাদের ৬ বছর বয়সী মেয়ে সানজিদা আক্তার।

ত্রিশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল আমিন স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, দ্রুতগতির ট্রাকটি ময়মনসিংহের দিকে আসছিল। বেলা সোয়া ৩টার দিকে ত্রিশালের কোর্ট বিল্ডিং এলাকা পর্যন্ত আসতেই সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ওই দম্পতিসহ তাদের কন্যাশিশুকে চাপা দেয় ট্রাকটি।

এতে ঘটনাস্থলেই স্বামী নিহত হন। আর মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা অন্তঃসত্ত্বা রত্নার পেট চিড়ে ভূমিষ্ঠ হয় গর্ভে থাকা কন্যাশিশু।

এ সময় স্থানীয়রা নিহত দম্পতির আহত সন্তান সানজিদা ও সদ্যোজাত কন্যাকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সানজিদারও মৃত্যু হয়। সদ্যোজাত শিশুটির ডান হাতের দুটি হাড় ভেঙে গেলেও সে বেঁচে যায়।

এ ঘটনায় নিহত জাহাঙ্গীরের বাবা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। গত ১৮ জুলাই রাতে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে চাপা দেয়া ট্রাকের চালক রাজু আহমেদ শিপনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় র‍্যাব।

পরদিন রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, ‘গ্রেপ্তারের পর শিপন স্বীকার করেছেন, দুর্ঘটনার সময় তার সহকারী ঘুমাচ্ছিলেন। টানা ট্রাক চালানোর কারণে তিনিও ছিলেন ক্লান্ত। আর পেছন থেকে একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে, বাঁয়ে চাপাতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।’

১৯ জুলাই সন্ধ্যায় চালক শিপনকে ত্রিশাল থানায় হস্তান্তর করে র‍্যাব। পরদিন বিকেলে তার ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে ময়মনসিংহ মুখ্য বিচারিক ৩ নম্বর আমলি আদালতে তোলে পুলিশ। এ সময় বিচারক মো. তাজুল ইসলাম সোহাগ দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

এ বিভাগের আরো খবর