বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যমুনা সার কারখানা বন্ধ, বোরো আবাদে শঙ্কা

  •    
  • ২৯ জুলাই, ২০২২ ০৯:৩৩

সার ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, ‘এখন যদি কারখানা উৎপাদনে না যায় তাহলে আগামী বোরো মৌসুমে কৃষকদের সার সরবরাহ করতে পারবে না কর্তৃপক্ষ। এতে ডিলারসহ কৃষকদেরও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

গ্যাস সংকটে ২১ জুন বন্ধ হয়ে যায় যমুনা সার কারখানার ইউরিয়া উৎপাদন। এর মধ্যে নতুন করে যোগ হয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। এতে সার কারখানার উৎপাদন ও সরবরাহ আরও অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

যমুনা সার কারখানা থেকে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী ছাড়াও উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার প্রায় আড়াই হাজার ডিলার সার উত্তোলন করেন। দীর্ঘ সময় উৎপাদন বন্ধ থাকলে কারখানা কমান্ডিং এরিয়ায় সার সংকটে আগামী মৌসুমে বোরো আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কায় আছেন সার ব্যবসায়ীরা।

সার ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, ‘এখন যদি কারখানা উৎপাদনে না যায় তাহলে আগামী বোরো মৌসুমে কৃষকদের সার সরবরাহ করতে পারবে না কর্তৃপক্ষ। এতে ডিলারসহ কৃষকদেরও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

সার কারখানা বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন শত শত শ্রমিক-কর্মচারী ও পরিবহন চালক।

তারাকান্দি ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম মানিক জানান, ‘কারখানাকেন্দ্রিক ৪২০টি ট্রাক রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত ৮৪০ চালক ও চালকের সহযোগী। ট্রাক মালিকরাও রয়েছেন। এ ছাড়া এই কারখানার সঙ্গে হাজারো শ্রমিক জড়িত। কারখানা বন্ধ থাকায় এরা সবাই মানবেতর জীবন যাপন করছে।’

সার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রতি বছর নানা অজুহাতে যমুনা সার কারখানা বন্ধ রেখে দেশকে সার আমদানিনির্ভর করে তুলতে চাচ্ছে একটি অসাধু চক্র।সার ব্যবসায়ী সরকার আবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা দেখছি, ধান লাগানোর মৌসুম এলেই কোনো না কোনো অজুহাতে কারখানা বন্ধ রাখা হচ্ছে। আর এই সুযোগে বিদেশ থেকে কয়েক গুণ বেশি দাম দিয়ে সার আমদানি করা হচ্ছে। প্রতি টনে সরকারকে ৮০ হাজার টাকার মতো ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এতে করে সরকার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে একটি চক্র লাভবান হচ্ছে।’

স্থানীয় সাংবাদিক প্রদীপ চন্দ্র মম বলেন, ‘কারখানা বন্ধের সুযোগে একটি চক্রের লাভ হচ্ছে। প্রতিবার বিদেশ থেকে যে সার আমদানি করা হয়, তা খুবই নিম্নমানের। কৃষকরা এটি ব্যবহার করতে চান না। তবুও একই সার বারবার আমদানি করছে সরকার।’

উৎপাদন বন্ধ থাকায় প্রতিদিন অলস সময় পার করছেন কারখানার সহস্রাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

জামালপুরের মানবাধিকারকর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ‘যমুনা সার কারখানায় প্রায় ১ হাজার ৬০০ কর্মচারী আছেন। কারখানা বন্ধ থাকলেও কর্মচারীদের কোটি কোটি টাকার বেতন তো বন্ধ থাকছে না। সরকার চাইলেই গ্যাস সরবরাহ করতে পারে। এতে সরকারের শত শত কোটি টাকা লোকসান হবে না।’

এসব বিষয়ে জানতে যমুনা সার কারখানায় গেলে সংবাদকর্মী শুনে দেখা করেননি কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাকির হোসাইন। এরপর কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

যমুনা সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আব্দুল হাকিম বলেন, ‘যমুনা বন্ধ থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সবাই। গ্যাস সংকট ও লোডশেডিংয়ের কারণে বন্ধ রয়েছে উৎপাদন। নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ করা হলে আবারও উৎপাদনে ফেরার আশা রয়েছে।’ গ্যাস সংকটের বিষয়ে তিতাস গ্যাসের বাল্ক কাস্টমার ম্যানেজার খাদেম কায়সার বলেন, ‘সর্বত্র গ্যাসের সংকটের কারণে এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সংকট সমাধানের পর সরকার চাইলে যমুনা সার কারখানাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহ করতে পারে।’

১ হাজার ৭০০ টন উৎপাদনক্ষম ইউরিয়া উৎপাদনকারী যমুনা সার কারখানায় প্রতিদিন ৪৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হয়।

জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে ১৯৯০ সালে দেশের সর্ববৃহৎ দানাদার ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যমুনা সার কারখানা চালু হয়। অল্প গ্যাসে তুলনামূলক বেশি সার উৎপাদন করতে পারে কারখানাটি। মান ভালো হওয়ায় এই সারের চাহিদাও অনেক বেশি।

এ বিভাগের আরো খবর