বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ঢাকাকে না জানিয়েই চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর চূড়ান্ত

  •    
  • ২৮ জুলাই, ২০২২ ২১:২৭

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘চীন ডেসপারেটলি এই সফর চায়। ঢাকায় চীনের দূতাবাস আমাদের সঙ্গে আলাপ না করেই সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের দিনক্ষণ ঠিক করেছে। তারপর তারা তা আমাকে জানাতে এসেছিল।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ না করেই চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর বাংলাদেশ সফরের দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলেছে ঢাকায় চীনের দূতাবাস। এক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো আগাম অনুমতি বা সম্মতি নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা ডেসপারেটলি এই সফর চায়। চীনা দূতাবাস আমাদের সঙ্গে আলাপ না করেই এই সফরের দিনক্ষণ ঠিক করেছে। তারপর তারা তা জানাতে এসেছিল।

‘আমরা তাদের বলেছি, এই সময়ে আমি দেশে থাকছি না। যুক্তরাষ্ট্রে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও শান্তিপূর্ণ ক্ষেত্রে ব্যবহার বাড়ানো বিষয়ক এক সম্মেলনে অংশগ্রহণ শেষে ওই সময় কম্বোডিয়ার নমপেনে আসিয়ানের একটি বৈঠকে অংশ নেব।

‘যেহেতু ওই সময়ে আমি দেশে থাকছি না, তাই তাদেরকে সফরসূচি পেছাতে হবে। পরের যে কোনো সময়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবে ঢাকা।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ২৫ জুলাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসে ড. মোমেনকে তার দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের বিষয়টি মোটামুটি চূড়ান্ত করার বিষয়ে প্রস্তাব দেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সহযোগিতা সংস্থাভুক্ত (আসিয়ান) পাঁচ দেশ, মঙ্গোলিয়া ও বাংলাদেশসহ বন্ধুপ্রতিম দেশ সফরের অংশ হিসেবে ঢাকায় আসার পরিকল্পনা করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। তিনি ৫ ও ৬ আগস্ট ঢাকা সফর শেষে উলানবাটোর যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে চীনা রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান।

জবাবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বেইজিংকে ঢাকার আগে উলানবাটোর সফর সারার প্রস্তাবের কথা জানানো হয়েছে। এই প্রস্তাবে চীন রাজি থাকলে ৭ আগস্টের বদলে ৬ আগস্টই নপেন থেকে ঢাকায় ফিরবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। যদিও চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসূচি পরির্বতন কঠিনই হবে।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ঢাকা সফরের পরিকল্পনাকে ‘অ্যাগ্রেসিভ প্ল্যান’ বলে মন্তব্য করেন আব্দুল মোমেন। একইসঙ্গে জানান, বেইজিং-এর এ ধরনের পরিকল্পনায় বিব্রত ঢাকা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই ঢাকা সফরের পরিকল্পনাকে বৈশ্বিক রাজনীতির অংশ হিসেবে দেখছেন একাধিক কূটনীতিক।

এর আগে ২০১৭ সালের নভেম্বরে আফ্রিকা যাওয়ার পথে উড়োজাহাজে জ্বালানি তেল নেয়ার জন্য ঢাকায় কয়েক ঘণ্টার যাত্রাবিরতি করেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওয়াং ই তখনকার পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকের সঙ্গে উড়োজাহাজে বসেই বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন এবং এরপর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে কিছু সময় কাটান।

চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের ঐতিহাসিক ঢাকা সফরের তিন মাসের মাথায় ওয়াং ই ঢাকায় ওই যাত্রাবিরতি করেন।

ধারণা করা হচ্ছে, ওয়াং ই-এর এই ঢাকা সফরের পরিকল্পনা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ-পরবর্তী বৈশ্বিক রাজনীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ভারত মহাসাগরীয় কৌশল বা আইপিএফ ও চারদেশীয় নিরাপত্তা জোট কোয়াড-এ বাংলাদেশ যাতে অংশ না নেয় সে বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে পুনরায় অনুরোধ জানানো হতে পারে। এর পরিবর্তে ঢাকা-বেইজিং সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে পারেন ওয়াং ই। বেইজিং আগে থেকেই এসব জোটে ঢাকার অংশগ্রহণ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে।

মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও ওয়াং ই-এর ঢাকা সফরের প্রস্তুতি অনানুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছে ঢাকা। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরসূচিতে পরিবর্তন না হলে সে ক্ষেত্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সরাসরি নিউ ইয়র্ক থেকে ঢাকায় ফিরবেন। তার পরিবর্তে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম নমপেনে যেতে পারেন। অথবা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা গহর রিজভী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আতিথেয়তা দেবেন।

সফরটি হলে দুই দেশের সম্পাদিত ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনায় আসবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র। এছাড়া ঢাকার পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে চীনের সহযোগিতার ওপর জোর দেয়া হবে। কারণ চলতি জুলাই মাসেই লানচ্যাং-মেকং সহযোগিতা জোটের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মিয়ানমার সফর করেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর