নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত চলমান রাজনৈতিক সংলাপে একাধিকবার মাইক বন্ধ করে বক্তব্য দিয়েছে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন। এমনকি টানা প্রায় ১০ মিনিটও মাইক বন্ধ রাখা হয়।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে চলমান রাজনৈতিক সংলাপের দশম দিনে বৃহস্পতিবার এমন ঘটনা ঘটেছে। এতে করে মিডিয়াকর্মীদের সংবাদ সংগ্রহ বিঘ্নিত হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই শুরু হওয়া চলমান রাজনৈতিক সংলাপে সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে না পারলেও বাইরে একটি স্ক্রিনের মাধ্যমে সংলাপের বক্তব্য শোনার ব্যবস্থা করে ইসি। তবে সংলাপের প্রথম দিনে তলোয়ার-রাইফেল নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক সমালোচনার পর কমিশন মিডিয়ার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সংলাপের তৃতীয় দিনে এসে অভিযোগ তোলেন, সাংবাদিকরা তার বক্তব্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করেননি। একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, গণমাধ্যমে তিনি কতটা ওপেন হবে সে নিয়ে ভাববেন। এরপর থেকে সংলাপে মাঝে-মধ্যে সামান্য সময়ের জন্য সংলাপ টেবিলের মাইক বন্ধ থাকার ঘটনা ঘটে। তবে বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের সংলাপকালে দীর্ঘ সময় মাইক বন্ধ রাখা হয়। সংলাপের শেষ প্রান্তে এসে এমন ঘটনা ঘটে।
সংলাপে তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী আগামী জাতীয় নির্বাচন দুই বা তিনদিনে করার প্রস্তাব দেন৷
এই পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আলমগীর প্রশ্ন তোলেন- রেজাল্ট কোনদিন ঘোষণা হবে? ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কোথায় রাখা হবে?
এসব প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে নজিবুল বশর সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়ার পরামর্শ দেন। এরপর বিকেল ৪টা ৫৩ থেকে টানা ১১ মিনিট মাইক বন্ধ রেখেই সংলাপ চলে। এর সামান্য ব্যবধানে আবারও ১ মিনিট মাইক বন্ধ থাকে। এ সময় বাইরে থেকে স্ক্রিনে সবাইকে কথা বলতে দেখা গেলেও মাইক বন্ধ থাকায় বক্তব্য শোনা যায়নি।
সংলাপ শেষে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনিই (নজিবুল বশর) বন্ধ করেছেন। আপনাদের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা সহমর্মিতা থাকবে।’
এভাবে বাইরে স্ক্রিন দিয়ে সংলাপ বেশিদিন চলবে না জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘তখন আমরা ব্রিফ করবো। ওনারাও ব্রিফ করবেন। কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে কেউ কেউ ফ্রিলি কথা বলতে চান। যেমন ফ্রিলি কিছু কথা বলতে ওনারা মাইক বন্ধ করেছেন। আমরা ওনাদের ওয়ার্নিংও দেইনি যে এটা বাইরে চালু রয়েছে। অভিজ্ঞ মানুষ। নিজে থেকেই বুঝে গেছেন। এ নিয়ে মনে করার কিছু নেই। আমার এখানে চা খাইতে আসবেন। তখন বিষয়টি বুঝিয়ে বলব।’
সচেতনভাবেই মাইক বন্ধ করেছেন কি না জানতে চাইলে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘চা খাওয়ার জন্য একটু সময় লাগে না!’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি তো জানতাম না যে এটা বাইরে স্ক্রিনে প্রচার হচ্ছে। তাহলে অনেক কথাই বলতাম না।’