একটি দল জাতীয় নির্বাচনে মোট ভোটের যত অংশ পাবে, সেই দলকে জাতীয় সংসদের আসনের তত শতাংশ বরাদ্দের বিষয়ে একটি রাজনৈতিক দলের প্রস্তাব মনে ধরেছে প্রধান প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা তার হাতে নেই জানিয়ে রাজনীতিকদের একমত হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে চলমান রাজনৈতিক সংলাপের দশম দিনে এসে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপের সাথে সংলাপের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সংলাপে ন্যাপ ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদের আসন বণ্টনের প্রস্তাব দেয়। এরপর সিইসি বলেন, ‘আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের প্রস্তাবটি অসম্ভব সুন্দর একটি প্রস্তাব। প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আরও কথা বলা দরবার। কমিশনের পক্ষে নয়, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এই সিস্টেমটার প্রতি আমার..’
‘এটা পরামর্শ করে রাজনীতিবিদরাও দেখবেন এটা আমাদের দেশের জন্য উপযোগী কি না? মানুষের সেন্টিমেন্টের সঙ্গে উপযোগী কী না? এটা রাজনৈতিক দল হিসেবে আপনারা দেখবেন। এটা আপনাদের রাজনৈতিক দায়িত্ব।’
রাজনৈতিক সিস্টেম পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে সিইসিবলেন, 'রাজনৈতিক দলগুলো সিস্টেমটা ইমপ্রুভ করতে পারলে ইসির তো কাজই করা লাগে না।'
রাজনৈতিক দায়িত্বটা নির্বাচন কমিশনের ওপর চাপিয়ে না দেয়ার পরামর্শ দিয়ে সিইসি।
রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, 'আপনারা কেন এটা নিয়ে কথা বলছেন না আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। সিস্টেমটা আপনারা ইমপ্রুভ করতে পারলে তো আমাদের কাজই করা লাগে না। এটা নিয়ে দল হিসেবে আপনারা কেন কথা বলেন না। পদ্ধতি পরিবর্তন করে রাজনৈতিক সুস্থতা ফিরিয়ে আনা গেলে সেটা রাজনৈতিক নেতৃত্বের বড় অর্জন হবে। আমরা একটি সিস্টেম দাঁড় করিয়ে দেন- সেটা নিশ্চিত করবে সঠিক নির্বাচন। চলমান পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনতে পারলে শুধু আমরা নয় ভবিষ্যত ইসিকেও পরিশ্রম করতে হবে না।
‘আপনারা অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করুন। আপনারা রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং পরিবেশ নির্বাচনের অনুকূল করে দিতে পারলে আমাদের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠান অনেক সহজ হবে।’
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে ভোটের দেড় বছর আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে ইসি। এ লক্ষ্যে ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনড় থাকা বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি সমমনা দল ইসির এ সংলাপ বর্জন করেছে।
দশম দিনে এসে ৩৬টি দলের সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা থাকলেও সর্বশেষ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ‘না’ করে দেয়ায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সংলাপে অংশ নেয়া দলের সংখ্যা দাঁড়াবে ২৬টি। সংলাপ বর্জন করেছে নয়টি দল। দুটি দল সময় বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করছে। এরপর আরো ২টি দলের সঙ্গে ইসির সংলাপে বসার কথা রয়েছে , যা চলবে এ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত।