সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় দুই শিশুর বিবৃতি রেকর্ডের সময় আদালতের আদেশ অমান্য হয়েছে কিনা তা জানতে বাবুল আক্তারের ভাই হাবিবুর রহমান লাবু ও মাগুরা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আশাদুল ইসলামকে তলব করেছে হাইকোর্ট।
আগামী ৭ আগস্ট তাদের আদালতে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি শাহেদ নুর উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে আজ দুই শিশুর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট শিশির মনির।
এর আগে গত ৮ জুন হাইকোর্ট এক আদেশে বলে, তদন্ত কর্মকর্তা শিশুদের বিবৃতি রেকর্ড করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে শিশু আইনের বিধানগুলো অনুসরণ করতে হবে।
বিবৃতি রেকর্ডের জন্য মাগুরা জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়কে স্থান হিসেবে নির্ধারণ করে দেয় আদালত।
হাইকোর্ট আরও বলেছে, জিজ্ঞাসাবাদের তারিখ নির্ধারণের অন্তত তিন দিন আগে তা জানিয়ে দিতে হবে। নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে দাদা শিশুদের মাগুরা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে হাজির করবেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় দাদা ছাড়া শিশুদের সঙ্গে আর কেউ থাকত পারবে না। তদন্ত কর্মকর্তা ছাড়াও একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা ও জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা বা তার মনোনীত কোনো একজন কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন।
হাইকোর্টের এ আদেশের পরে গত ৪ জুলাই মাগুরা গিয়ে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে দুই শিশুর বিবৃতি রেকর্ড করা হয়।
ওই দিন শিশুদের বিবৃতি রেকর্ডের সময় দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উত্থাপন করেন। একদিকে বাবুল আক্তারের ভাই আইনজীবী হাবিবুর রহমান লাবু অভিযোগ করেন, তদন্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টের আদেশ ভঙ্গ করে সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বাইরে গিয়ে ফোনে কথা বলেছেন। এছাড়া তিনি অতিরিক্ত লোক প্রবেশ করিয়েছেন।
অপরপক্ষের অভিযোগ, চাচা হাবিবুর রহমান লাবু সেখানে উপস্থিত থেকে আদালতের আদেশ অমান্য করেছেন।
দুই পক্ষের এই পাল্টাপাল্টির অভিযোগের বিষয়ে শুনে আদালত দুইজনকে হাজির হতে আদেশ দেয়।
এর আগে গত ১৬ মার্চ শিশু আইন মেনে সতর্কতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নির্দেশ দেয় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত। আদালতের এ আদেশের পরে দুই শিশু পিবিআইয়ের অফিসে হাজির করতে নোটিশ দেয়, যেটা তারা শিশু আইন অনুযায়ী করতে পারেন না। এ কারণে শিশু আইন অনুসারে যাতে দুই শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তার নির্দেশনা চেয়ে গত ৩০ মার্চ হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত মাগুরা সমাজসেবা কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেয়।
তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে শিশুসন্তানকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গেলে চট্টগ্রাম বন্দরনগরীর জিউসি মোড়ে তাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই সময়ে ছেলে আক্তার মাহমুদ মাহিরের বয়স ছিল ৬ ও মেয়ে তাবাসসুমের বয়স ছিল ৪ বছর। হত্যাকাণ্ডের একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ছিল ছেলে মাহির। বর্তমানে তারা বাবুলের মাগুরার কাউন্সিল পাড়ার বাড়িতে দাদা ও চাচার সঙ্গে থাকে।