বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আরডিএর সাবেক মহাপরিচালকসহ ২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

  •    
  • ২৭ জুলাই, ২০২২ ১৬:০২

মামলার বাদী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘জমি কেনায় প্রতি শতকের মূল্য দেখানো হয়েছে অন্তত ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু প্রতি শতকের জন্য বিক্রেতাদের দেয়া হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা করে।’

প্রকল্পের ২ কোটি ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বগুড়া পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমির (আরডিএ) সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক এম এ মতিনসহ দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া মামলার দায় থেকে পাঁচজনকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে।

বগুড়া জেলা জজ আদালতে বুধবার অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদকের কোর্ট সহকারী পরিদর্শক নুরুল ইসলাম বাদল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগামী ২ আগস্ট মামলার শুনানির দিন ঠিক করেছে আদালত।’

এম এ মতিন ছাড়াও অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে আরডিএর অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক মো. মাহমুদ হোসেন খানের বিরুদ্ধে। মাহমুদ আমেরিকায় পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।

যাদের অব্যাহতির জন্য আবেদন করা হয়েছে, আরডিএর পরিচালক (প্রকল্প পরিকল্পনা ও পরিবীক্ষণ) মো. নজরুল ইসলাম খান, উপ প্রকল্প পরিচালক (বাস্তবায়ন) মো. আবিদ হোসেন মৃধা, উপপরিচালক (সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগ) ও সহকারী প্রকল্প পরিচালক (মনিটরিং) শেখ শাহরিয়ার মোহাম্মদ, সহকারী পরিচালক (ভৌত অবকাঠামো) মো. আরিফ হোসেন জুয়েল এবং হিসাবরক্ষক মোছা. রুনিয়া ইয়াসমিন।

অ্যাকাডেমির ‘পল্লী জনপদ’ প্রকল্পের অনিয়মের অভিযোগে ২০১৯ সালের ৩ এপ্রিল বগুড়ার শেরপুর থানায় এই সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক (বর্তমানে রাঙ্গামাটিতে কর্মরত) আমিনুল ইসলাম।

মামলার বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া জেলা দুদকের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানান, ‘পল্লী জনপদ’ হলো গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং আধুনিক নাগরিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত সমবায়ভিত্তিক বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প। এই প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয় ৪২৭ কোটি টাকা।

তিনি আরও জানান, বগুড়ার শাজাহানপুর, খুলনার রূপসা, কক্সবাজার, রংপুরের গঙ্গাচড়া, ঢাকার গোপালগঞ্জ এবং বরিশালে সরকারি বিধিমতে জমি অধিগ্রহণ করা কথা। কিন্তু গোপালগঞ্জ বাদে অন্য কোনো এলাকায় বিধি অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি।

এজাহারের বরাতে মনিরুজ্জামান বলেন, ‘প্রকল্পের আওতায় জমি অধিগ্রহণ বাবদ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে জমি অধিগ্রহণ খাতে ২৩ কোটি সাড়ে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। পরের অর্থবছরে দেয়া হয় আরও ১১ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এই টাকা দেয়া হয় বগুড়া আরডিএর সোনালী ব্যাংক শাখার অ্যাকাউন্টে। যা প্রকল্প পরিচালক হিসেবে একক স্বাক্ষরে পরিচালনা করেন মাহমুদ হোসেন খান।’

তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘প্রকল্পের জন্য ৩ দশমিক ৭৫ একর জমি অধিগ্রহণ করার কথা থাকলেও ৫ দশমিক ৬৭ একর জমি অধিগ্রহণ দেখানো হয়। এর বিপরীতে ২৪টি কবলা দলিল সম্পাদন করা হয়।

‘জমি কেনা হয় বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের জামালপুর মৌজায়। ৫ দশমিক ৬৭ একর জমি ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৩১ হাজার ৪০০ টাকায় কেনা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এই জমি ক্রয়ে প্রকল্প পরিচালক, সহকারী প্রকল্প পরিচালক ও হিসাবরক্ষক ওই ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন করেন।’

দুদক সূত্র জানিয়েছে, মতিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ২০১৮ সালে। ওই বছরেই অনুসন্ধানের অনুমতি দেয়া হয়। এরপর বগুড়ার আরডিএর কেনা জমির মূল্য নির্ধারণের (অধিগ্রহণ নিয়ম অনুযায়ী) জন্য জেলা প্রশাসন শাখায় যোগাযোগ করা হয়। জেলা প্রশাসন জানায়, আরডিএর কেনা জমির অধিগ্রহণ মূল্য ৫ কোটি ২৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯৩৯ টাকা। এই জমি ক্রয়ে কোনো অধিগ্রহণপ্রক্রিয়া মানা হয়নি। আসামিরা যোগসাজশে ব্যক্তিস্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হতে ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি প্রকল্পের ২ কোটি ৫ লাখ ৬ হাজার ৯২২ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

মামলার বাদী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এই জমি কেনায় প্রতি শতকের মূল্য দেখানো হয়েছে অন্তত ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু প্রতি শতকের জন্য বিক্রেতাদের দেয়া হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা করে।’

প্রকল্প পরিচালক নজরুল ইসলাম বরাবরই গণমাধ্যমে বলেন এসেছেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি ঠিক না। আশপাশের মৌজার জমির দামের বিষয়টি যাচাই-বাছাই করেই জমি কেনা হয়েছে। জমির মালিকদের কথার ভিত্তি নেই।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আরডিএর সাবেক পরিচালক এম এ মতিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৯ সালের ২১ মার্চ কয়েক হাজার কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে এম এ মতিন ও তার স্ত্রী সাবিনা আফরোজের সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি দেয় দুদক। এই সম্পদবিবরণী এখনো জমা দেননি তারা। মতিনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার স্ত্রী সাবিনা আফরোজের (গৃহিণী) নামেও ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট, জমি ও ব্যাংকে অনেক অর্থ রয়েছে বলে জানায় দুদক।

এ বিভাগের আরো খবর