বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বুলবুল হত্যা পরিকল্পিত, দাবি সহপাঠীদের

  •    
  • ২৭ জুলাই, ২০২২ ১১:২২

বুলবুলের রুমমেট ও হলের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল রোমান বলেন, ‘গাজীকালু টিলার ঘটনাস্থলের ১০ ফিট দূরে তাদের সঙ্গে আরেকটি কাপল ছিল। এ সময় ছিনতাইকারীরা কিভাবে তাদের সামনে বুলবুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করে বিষয়টি বিশ্বাস করা অসম্ভব। আমি মনে করি এটি পরিকল্পিত হত্যা। আমার ভাইয়ের খুনিদের বিচার চাই। বিচার না হলে আমরাও লাশ হব।’ 

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তার রুমমেট ও সহপাঠীরা।

বুলবুলের দাদা বাড়ি নরসিংদীতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিউজবাংলাকে এ দাবি করেন তারা।

এ সময় কথা হয় বুলবুলের সহপাঠী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম, সুমন মিয়া, হাবিবুর রহমান আসিফ, আব্দুল্লাহ মুজাহিদ ও তার রুমমেট খুব কাছের বড় ভাই সমাজকল্যাণ বিভাগের আব্দুল্লাহ আল রোমানের সঙ্গে।

বুলবুলকে শেষ বিদায় জানাতে তারা সিলেট থেকে এসেছেন নরসিংদীতে।

কী হয়েছিল সোমবার বিকেলে জানতে চাইলে সহপাঠী আমিনুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে দুপুর দেড়টার দিকে সর্বশেষ দেখা হয় বুলবুলের। আমরা শাহপরাণ হলে থাকি। বুলবুল হলের ১১৮ নম্বর রুমে থাকত। সোমবার বিকেলে আমাদের বিভাগের প্রথম বর্ষের এক মেয়ে বান্ধবিকে নিয়ে ঘুরতে বের হয় বুলবুল।

‘এরপর শুনি ছিনতাইকারিরা নাকি সন্ধ্যার দিকে তাকে ছুরিকাঘাত করেছে। সবাই হন্য হয়ে ছুটি বুলবুলকে বাঁচাতে। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে দেখি বুলবুল আর নেই। বুলবুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে ধারণা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বুলবুলের হত্যার বিচার চেয়ে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেছি। প্রশাসনের কর্মকর্তরা দোষীদের আইনের আওতায় আনতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমাদের।’

বুলবুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার করা হয়েছে দাবি করেছেন তার রুমমেট ও হলের বড় ভাই আব্দুল্লাহ আল রোমান।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সোমবার আমি ব্যক্তিগত কাজের জন্য সিলেট আদালত পাড়ায় যাই। দুপুর একটার দিকে হলে বুলবুলের সঙ্গে সামনাসামনি কথা হয়।

‘পরে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মেসেঞ্জারে চ্যাট হয়। এরপর তাকে জানালাম, আদালতে আমার কাজ ঠিক-ঠাক হয়ে গেছে। এখন ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে ডাকবেন। তখন সে ‘বেস্ট অফ লাক’ জানিয়ে এসএমএস দেয়। এই ছিল তার সঙ্গে আমার সর্বশেষ কথা।’

বুলবুলকে শেষ বিদায় জানাতে নরসিংদীতে এসেছেন তার সহপাঠীরা। ছবি: নিউজবাংলা

রোমান বলেন, ‘ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক মেয়ে জানায় বুলবুলকে ছিনতাইকারিরা ছুরিকাঘাত করেছে। সে সময় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে ছিলাম। খবর শুনে আমি তার বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ে ছুটে যাই গাজী-কালুর টিলায় ঘটনাস্থলে।

‘সেখান থেকে রক্তাক্ত জখম বুলবুলকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

রোমান আরও বলেন, ‘যে মেয়েটির সঙ্গে বুলবুল ঘুরতে গিয়েছিল, তার সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তিনি আমাদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।

ওই শিক্ষার্থীর বরাতে রোমান নিউজবাংলাকে জানান, গাজী-কালুর টিলার ঘটনাস্থলের ১০ ফিট দূরে তাদের সঙ্গে আরেকটি কাপল ছিল। এ সময় ছিনতাইকারীরা কিভাবে তাদের সামনে বুলবুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করে বিষয়টি বিশ্বাস করা অসম্ভব।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি পরিকল্পিত হত্যা। আমার ভাইয়ের খুনিদের বিচার চাই। বিচার না হলে আমরাও লাশ হব।’

বুলবুলের সহপাঠীরা জানান, গ্রামে বুলবুলদের পরিবার তেমন স্বচ্ছল না। তাদের সংসারে টানাপোড়ন রয়েছে। বুলবুল লেখাপড়ার পাশাপাশি টিউশনি করত। সেখান থেকে নিজের খরচ চালিয়ে বাড়িতেও টাকা দিত।

তার বড় ভাই জাকারিয়া নরসিংদীতে সরিষার তেল বিক্রি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। বুলবুল সরকারি কর্মকর্তা হবে সেই স্বপ্নই ছিল তার পরিবারের। কিন্তু দরিদ্র এই পরিবারের স্বপ আর পূরণ হলো না। তাই বুলবুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়াসহ দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি তাদের।

এর আগে গত সোমবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের গাজীকালুর টিলা এলাকা থেকে সন্ধ্যায় বুলবুল আহমেদকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ২২ বছরের বুলবুল লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়তেন।

এ বিভাগের আরো খবর