বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

একটু আস্থা রাখুন, ডিগবাজি খাব না: সিইসি

  •    
  • ২৬ জুলাই, ২০২২ ১৩:৫১

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমাদের ওপর একটু আস্থা রাখুন। আস্থা রাখতে গিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলে হবে না। আপনাদের নজরদারি থাকতে হবে। আমরা কি আসলেই সাধু পুরুষ না ভেতরে ভেতরে অসাধু। সেই জিনিসটা আপনারা যদি নজরদারি না রাখেন, তাহলে আপনারাও আপনাদের দায়িত্ব পালন করলেন না।’

নির্বাচন কমিশনের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থা রাখার অনুরোধ করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমের ওপর নজর রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

সিইসি বলেন, ‘আমাদের ওপর একটু আস্থা রাখুন। আস্থা রাখতে গিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলে হবে না। আপনাদের নজরদারি থাকতে হবে। আমরা কি আসলেই সাধু পুরুষ না ভেতরে ভেতরে অসাধু। সেই জিনিসটা আপনারা যদি নজরদারি না রাখেন, তাহলে আপনারাও আপনাদের দায়িত্ব পালন করলেন না।

‘কঠোর নজরদারিতে আমাদের রাখতে হবে। কোনো কমপ্লেইন পেয়েছেন? সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কাছে পাঠান। অনেক টেলিফোন থাকবে সে সময়। ক্যামেরা দিয়ে হয়তো আমরা অনেক সেন্টার ওয়াচ করতে পারব। আমরা প্রতিশ্রুতি যে দিচ্ছি তার কিছু মূল্য থাকা উচিত। একেবারে যে আমরা ডিগবাজি খেয়ে যাব তা তো নয়। সেটি হওয়ার কথা নয়।'

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে মঙ্গলবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের অষ্টম দিনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন সিইসি।

ইসির সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপে বসে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিরা। ছবি: নিউজবাংলা

দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে ইসি। তারই অংশ হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

এর আগে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে। সে ভোটে ব্যাপক অনিয়ম, দিনের ভোট রাতে হওয়াসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়ারও অভিযোগ ওঠে। এরপর ইসির ওপর আস্থা হারানোর কথা বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

হুদা কমিশনের মেয়াদ শেষের পর দায়িত্ব নিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন চেষ্টা করছে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়ার।

তবে এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকেও ইসিকে সহায়তা করতে হবে বলে জানান সিইসি হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নির্বাচনের আইন অনুযায়ী হবে। সময় দেয়া হবে। ভোটাররা যাবেন। ভোট দিতে থাকবেন। আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে আমাদের অংশের দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করব। পাশাপাশি আপনাদের (রাজনৈতিক দল) অনুরোধ থাকবে, আপনারাও কিছু দায়িত্ব নেবেন। দায়িত্ব নিয়ে অর্থশক্তি, পেশিশক্তি, ভোটকেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টা করবেন। আমরা দায়িত্বটা শেয়ার করব।’

ভোটে অর্থশক্তির ব্যবহার বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলারও আহ্বান জানান সিইসি।

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘অর্থশক্তিকে আমরা কীভাবে সামাল দেব, আপনারা আমাকে একটা বুদ্ধি দেন। দেশে অর্থ বেড়েছে। আমাদের সবার বাড়িতে বস্তা বস্তা টাকা। বস্তা বস্তা অর্থ আমরা নির্বাচনে ব্যয় করি। এই অর্থ নিয়ন্ত্রণ করব কীভাবে?

‘যেটা প্রকাশ্যে হয় তার কিছুটা নির্বাচন কমিশনে দেখানো হয় যে, ৫ লাখ টাকা খরচ করেছে। তার বাইরে গিয়ে যদি আমি গোপনে ৫ কোটি টাকা খরচ করি, কীভাবে আপনি আমাকে ধরবেন বা আমি আপনাকে ধরব? এগুলোও সম্ভব যদি এ জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হয়। সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘একটি অপসংস্কৃতি হয়ে গেছে। পয়সা নিয়ে ঢালতেছি। মাস্তান হায়ার করতেছি। প্রফেশনাল কিলারও হায়ার করতে খুব বেশি পয়সা লাগবে না। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে আমাদের সবাইকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। অর্থশক্তি, পেশিশক্তির ব্যাপারে আমরা এখনই কিছু বলতে পারব না। মাঠে আপনাদের থাকতে হবে। তথ্যগুলো পাঠালে আমরা কিন্তু সাহায্য করব।’

সংলাপে ইভিএমে ভোট নিয়েও জমিয়তের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন সিইসি। বলেন, ‘লাঠি দিয়ে হকিস্টিক দিয়ে ইভিএম মেশিনটা ভেঙে ফেলতে পারবেন। কিন্তু এখানে ভোটের নড়চড় হবে না। একজন লোক যদি ব্যালটে ১০০টা করে, পাঁচজন লোক যদি ৫০০টা করে ভোট দেয়, ভোট দিলে পাঁচজন। কিন্তু ভোট কাউন্ট হলো ৫০০।

‘ভোটের হার তো অনেকবেশি। কিন্তু সেটি কী ৫০০ ভোট, নাকি ৫ ভোট? পাঁচজন যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করল, সেটি ৫০০ জনের পক্ষে। এমন বিভিন্ন ধরনের সমস্যা আছে। এখন এটা আমি বলতে চাচ্ছি, কীভাবে সমস্যাগুলো ব্যালান্স করা যায়, একটা নিরপেক্ষ ও দুর্নীতিমুক্ত নির্বাচন করা যায় সেই চেষ্টা করছি।’

এ সময় বৈঠকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের কথা উঠলে জানান, তিনি সে নির্বাচন সম্পর্কে কিছু জানেন না, দেখেনওনি। তবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আগের নির্বাচনের মতো হবে না বলে আস্থা রাখতে অনুরোধ করেন রাজনৈতিক দলটির নেতাদের।

সিইসি বলেন, ‘আপনারা আমাদেরকে অবশ্যই চাপে রাখবেন। আমি বিশ্বাস করি এটা প্রয়োজন আছে। আপনাদেরকেও আমাদের উপর নজরদারি রাখতে হবে। আমাদের থেকে কোনো অনিয়ম লক্ষ্য করলে তা প্রকাশ করে দেবেন।’

‘আমরা কোনোভাবেই পক্ষপাতিত্ব করতে চাই না’-যোগ করেন সিইসি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে ভোটের দেড় বছর আগেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে ইসি। এ লক্ষ্যে ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনড় থাকা বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি সমমনা দল ইসির এ সংলাপ বর্জন করেছে।

অষ্টম দিনে এসে ২৮টি দলের সঙ্গে সংলাপ হওয়ার কথা থাকলেও সর্বশেষ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ‘না’ করে দেয়ায় মঙ্গলবার পর্যন্ত সংলাপে অংশ নেয়া দলের সংখ্যা দাঁড়াবে ২১টি। এরপর আরও ১১ দলের সঙ্গে ইসির সংলাপে বসার কথা রয়েছে, যা চলবে এ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত।

এ বিভাগের আরো খবর