চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫ জনকে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারক হাকিম আদালতে শুনানি শেষে মঙ্গলবার দুপুরে বিচারক ফারজানা ইয়াসমিন তাদের রিমান্ডে পাঠান।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।
তিনি জানান, আসামিদের ৭ দিন করে রিমান্ডে পেতে আবেদন করা হয়েছিল। শুনানি শেষে বিচারক ২ দিন করে রিমান্ডে নিতে অনুমতি দিয়েছেন।
গত ২০ জুলাই বিকেলে হাটহাজারী থানায় অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন ওই ছাত্রী। এজাহারে পথরোধ করে মারধর, ছিনতাই ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে হুমকি দেয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে।
আগের দিন গত ১৯ জুলাই প্রক্টরের কাছে নিপীড়নের লিখিত দেন তিনি। এতে উল্লেক করেন, ১৭ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি ও তার বন্ধু প্রীতিলতা হলে ফেরার সময় কাছের একটি সড়কে কয়েক যুবক তাদের পথরোধ করেন। তাদের মারধর করে বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনে ঝোপে নিয়ে যান যুবকরা।
ছাত্রীর দাবি, তাকে বিবস্ত্র করে মোবাইলে ভিডিও করা হয় এবং সেই ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চান যুবকরা। তার বন্ধু এর প্রতিবাদ করলে তার ওপরও নির্যাতন করা হয়। পরে যুবকরা দুজনের মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনতাই করে পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাদের মধ্যে তিনজন স্থানীয় বহিরাগত।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আজিম হোসাইন এবং নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নুরুল আবসার বাবু। হাটহাজারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র নুর হোসেন শাওন এবং একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাসুদ রানা ও সাইফুল ইসলাম।
র্যাব-৭-এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ ভুক্তভোগীর অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ছয়জন জড়িত। তারা ছাত্রীকে মারধরের পর বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণেরও চেষ্টা করেন।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, ‘তারা তিনটি মোবাইলে ভিডিও ধারণের চেষ্টা করেন। এর মধ্যে দুটি মোবাইল ওই ছাত্রী ও তার ছেলে বন্ধুর। অন্যটি ঘটনার হোতা আজিম হোসাইনের। আজিম নিজের মোবাইল দিয়ে ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করেছেন।’
র্যাব কর্মকর্তা এম এ ইউসুফ বলেন, ‘শুক্রবার ঘটনার মূল অভিযুক্ত আজিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং স্থানীয়। তার নেতৃত্বে পুরো ঘটনা ঘটেছে। তাকে গ্রেপ্তারের পর আমরা বাকিদের নাম পাই।’
রোববার রাতে গ্রেপ্তার আজিম হোসাইন ও নুরু আবসার বাবুকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।