হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে বাড়িতে ঢুকে এক হিন্দু পরিবারের নারীসহ আট সদস্যকে মারধর করা হয়েছে।
জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে স্থানীয় সাইজ উদ্দিন ও তার স্বজনরা এই হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে অবশ্য তাদের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোন দেয়া হলে তারা কেউ বাড়িতে নেই বলে জানানো হয়েছে।
উপজেলার বদরপুর গ্রামে সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলী নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আহতরা হলেন রবীন্দ্র সূত্রধর, গোপাল সূত্রধর, প্রীতি সূত্রধর, কবিতা সূত্রধর, বিকাশ সূত্রধর, রথীন্দ্র সূত্রধর ও রনধীর সূত্রধর। তাদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি জানান, বদরপুর গ্রামের বাসিন্দা রথীন্দ্র সূত্রধর বীজ বপনের জন্য জমি প্রস্তুত করে রাখেন। সেই জমিতে জোর করে বীজ বপন করতে শুরু করেন পাশের কালনীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাইজ উদ্দিন। এ সময় রথীন্দ্র ও তার ছেলে বাধা দিলে সাইজ উদ্দিন ও তার ভাইরা তাদের গালাগাল করে ও মারধরের হুমকি দেয়।
রথীন্দ্র সূত্রধরের ভাই নিখিল সূত্রধর বলেন, ‘সাইজ উদ্দিনের জমির পাশেই আমাদের জমি। সাইজ উদ্দিনরা আমাদের অনেক জায়গা জোর করে দখল করেছে। এখন ছোট একটি বীজতলাও তারা দখলে নেয়ার চেষ্টা করছে। আমরা বীজতলাটি তৈরি করে রেখে আসতেই সাইজ উদ্দিন ও তার ভাইয়েরা এতে বীজ বাইন (বপন) করতে শুরু করে।
‘আমার ভাই ও ভাতিজা বাধা দিলে সাইজ উদ্দিনরা গালাগাল শুরু করে। এ সময় আমার ভাতিজা তার বাবাকে ওখান থেকে নিয়ে আসে এবং আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাইজ উদ্দিন ও তার ভাইয়েরা হামলা চালায়। আমার ভাইয়েরা দৌড়ে বাড়িতে চলে এলে তারাও বাড়িতে এসে মারপিট শুরু করে। এমনকি ঘরের নারীদের মারপিট করে বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।’
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) সোহরাব রুস্তম বলেন, ‘হাসপাতালে আটজন ভর্তি হন। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। শক্ত কিছু দিয়ে তাদের মারপিট করা হয়েছে।’
হামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত সাইজ উদ্দিনকে ফোন দেয়া হলে তা রিসিভ করেন তার মা। তিনি জানান, তার কোনো সন্তান বাড়িতে নেই। কোথায় আছেন তাও তিনি জানেন না। এর পরই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলী বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ঘটনার মূল কারণ আমরা জানার চেষ্টা করছি।’