নেত্রকোণার খালিয়াজুরী থানার ৯ পুলিশ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা করেছেন এক ব্যক্তি।
বাদীর অভিযোগ, গত ২৩ জুন রাতে মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে তার ভাই সাজিবুল তালুকদারের কাছে ঘুষ দাবি করেন ওই পুলিশ সদস্যরা। তাতে রাজি না হওয়ায় তাকে পিটিয়ে হত্যার পর জলাধারে মরদেহ ফেলে দেয়া হয়।
খালিয়াজুরীর আমলি আদালতে গত মঙ্গলবার মামলার আবেদন করেন মৃতের ভাই সজিবুল তালুকদার। বৃহস্পতিবার বিচারিক হাকিম তনিমা রহমান অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।
বাদীর আইনজীবী সুলতানা মুক্তা নাসরিন ও বাদী সজিবুল তালুকদার সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন খালিয়াজুরী থানার এসআই আব্দুল জলিল, মকবুল হোসেন, হুমায়ূন কবির, এএসআই ফরহাদ আলী, কনস্টেবল বিন কাশিম, শফিকুল ইসলাম, আশরাফুর রহমান, তৌহিদুল, নাজমুল এবং খালিয়াজুরীর ফতুয়া গ্রামের আ. কুদ্দুছ, বল্লী গ্রামের জসিম উদ্দিন, শুকলাল মিয়া, নূরছালাম মিয়া, জামরুল, বানাছ ও মনির মিয়া।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৩ জুন রাতে সাজিবুল ও তার কয়েক বন্ধু বল্লী গ্রামের একটি ঘরে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় ফতুয়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছের প্ররোচনায় খালিয়াজুরী থানার পুলিশ সদস্যরা গিয়ে তাদের আটক করেন। এসআই আব্দুল জলিল সাজিবুলের বিরুদ্ধে জুয়া খেলার অভিযোগ তুলে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।
বাদীর অভিযোগ, সাজিবুল তা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে লাঠিপেটা করেন ওই পুলিশ সদস্যরা। তাদের সঙ্গে মারধরে যোগ দেন ওই এলাকার আরও কয়েকজন। একপর্যায়ে সাজিবুল লুটিয়ে পড়লে মারা গেছেন ভেবে তাকে পাশের একটি জলাধারে ফেলে দেয়া হয়। ঘণ্টা দেড়েক পর তাতে সজিবুলের লাশ ভেসে ওঠে। পরদিন ভোরে গিয়ে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নিয়ে যায়।
বাদী জানান, আব্দুল কুদ্দুছের সঙ্গে সজিবুলের আগে থেকে বিরোধ ছিল। এর জেরে তাকে পুলিশ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে খালিয়াজুরী থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, ‘আদালতে দেয়া বাদীর অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। সজিবুলসহ ৯ থেকে ১০ জন সেদিন একটি ঘরে বসে জুয়া খেলছিলেন।
‘এ সময় পুলিশ নৌকা নিয়ে সেখানে গেলে তারা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। তখন সজিবুল পানিতে ডুবে মারা যায়। ওইদিন গ্রেপ্তার অন্য ৯ আসামিও এই জবানবন্দি দিয়েছেন।’