ভুয়া নথির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আনা দুই কনটেইনার বিদেশি মদ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ধরা পড়ার মামলায় তিন আসামিকে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। যদিও এ ঘটনার সূত্র ধরে পরে আরও তিন কনটেইনারসহ মোট পাঁচ কনটেইনার মদ জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসাদ বেগমের আদালতে তোলা হয় মামলার অন্যতম আসামি আব্দুল আহাদকে। পরে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মামলার অন্য আসামি নাজমুল হোসেন ও সাইফুল ইসলামকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জালিয়াতি করে অবৈধ চালানের ঘটনায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ও পেনাল কোডে ৪২৫-এর ৪ ধারায় র্যাব মামলাটি করেছিল।
মামলায় বলা হয়, শনিবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে টিপুরদী এলাকায় চেকপোস্টে দুটি কনটেইনার থেকে ৩৬ হাজার ৮১৬ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করে র্যাব-১১-এর একটি দল।
উদ্ধার হওয়া মদের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। এ ঘটনায় র্যাব-১১-এর উপপরিচালক মো. শাহাদাৎ হোসেন সোনারগাঁও থানায় মামলা করেন।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা স্বীকার করেছে- মামলার মূল আসামি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার ষোলগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম ভুয়া কাগজ তৈরি করে বিদেশ থেকে মদ আনেন। র্যাব তার ওয়ারীর বাসায় তল্লাশি চালিয়ে ৯৮ লাখ ২৯ হাজার ৫০০ টাকা, ৪ হাজার ২৫৫ ইউরো, ৭ হাজার ৪৪৪ বার্থ মুদ্রা, ২০ হাজার ১৪৫ ভারতীয় রুপিসহ চীন, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের মুদ্রাও পাওয়া গেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনারগাঁও থানার এসআই মোস্তাফিজুর রহমান জানান, র্যাব গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে কনটেইনারভর্তি মদ জব্দের সূত্র ধরে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে অভিযান আরও তিন কনটেইনার মদ জব্দ হয়েছে। সব মিলিয়ে জব্দ হওয়া মদের কনটেইনার এখন পাঁচটি।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের ৫ নম্বর ইয়ার্ডে সোমবার বিকেলে মদভর্তি দুটি কনটেইনার জব্দ করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিরীক্ষা, অনুসন্ধান ও গবেষণা (এআইআর) এবং পোর্ট কন্ট্রোল ইউনিট (পিসিইউ) টিম।
এআইআর বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মো. সাইফুল হক নিউজবাংলাকে জানান, প্রায় একই সময়ে একই কারণে আরেকটা কনটেইনারের বিষয়ে সন্দেহ হয় পিসিইউ টিমের। তাই তারা বাগেরহাটের মোংলা ইপিজেডের ভিআইপি ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের নামে আসা মদভর্তি আরেকটি কনটেইনার সিলগালা করে।