বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লক্ষ্মীপুরের হাসপাতালে তীব্র চাপ রোগীর

  •    
  • ২৫ জুলাই, ২০২২ ১২:৩৪

সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স মো. হারুনুর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাসপাতালে ১০টি শিশু-বেড রয়েছে। অথচ সেখানে ভর্তি থাকছে গড়ে প্রায় ৮০ থেকে ৯০টি শিশু। তাদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

লক্ষ্মীপুরে গরমে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগী। ভ্যাপসা গরমে সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর চাপ। রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

এমন পরিস্থিতিতে বেডে জায়গা না পেয়ে ওয়ার্ডের মেঝে এমনকি বারান্দায়ও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে রোগীদের। অন্যদিকে এমন গরমের মধ্যে লোডশেডিংয়ে নাকাল মানুষ। রোগীদের সঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন স্বজনরাও।

জানা গেছে, ১৬ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, জ্বর ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হাজারের বেশি রোগী। আক্রান্তদের মধ্যে শিশু ও বয়স্ক রোগীই বেশি। রামগতি, কমলনগর, রায়পুর ও রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোর চিত্রও একই।

রামগতি আবহাওয়া সতর্কীকরণ অফিসের কর্মকর্তা মো. সৌরভ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে আগে ৩২-৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। দুই দিন ধরে তাপমাত্রা ছিল ২৭-২৮ ডিগ্রি। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমে আসবে। বৃষ্টি না হলে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।’

সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে জ্বর নিয়ে ভর্তি মাইমুনা আক্তার। নিউজবাংলাকে তার মা শারমিন আক্তার বলেন, ‘৫ দিন ধরে জ্বরে ভুগছে মেয়েটি। হাসপাতাল থেকে কিছু ওষুধ দিলেও বাইরে থেকে বাকিগুলো কিনতে হয়।’

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর জেলা সদর হাসপাতাল ১০০ শয্যার। কিন্তু ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে চলছে হাসপাতালের কার্যক্রম। কয়েক দিন ধরে গরমে হাসপাতালে নানা রোগীর চাপ বেড়েছে। ইনডোর-আউটডোরে প্রতি দিন প্রায় হাজারখানেক লোক চিকিৎসা নিতে আসছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ জন।

জেলাটিতে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ বার লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ থাকে না দিনে প্রায় ৫-৬ ঘণ্টা। এতে হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা দুর্ভোগে পড়ে।

সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি শরীফ হোসেন ও গাইনি ওয়ার্ডের কোহিনুর বেগম। তারা বলেন একই কথা। ‘একদিকে প্রচণ্ড গরম, অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে দিশাহারা। এ ছাড়া ওয়ার্ডে বেড না থাকায় বারান্দা ও মেঝেতেও রোগী থাকছে। পা ফেলার জায়গা নেই। চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে থাকতে হয়।’

সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স মো. হারুনুর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাসপাতালে ১০টি শিশু-বেড রয়েছে। অথচ সেখানে ভর্তি থাকছে গড়ে প্রায় ৮০ থেকে ৯০টি শিশু। তাদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আবু তাহের বলেন, ‘প্রতিদিন বেশ কয়েকবার লোডশেডিং হচ্ছে। এ কারণে ঠিকমতো সেবা দেয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালের কার্যক্রম ঠিক রাখতে জেনারেটর চালাতে হয়।’

সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মো. ইছমাইল হাসান বলেন, ‘অন্যান্য মাসের তুলনায় গত কয়েক দিন ধরে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। দৈনিক ৭০ থেকে ৮০ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ থাকলেও জনবল সংকটের কারণে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

গরমে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ে জানিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন আহমেদ কবির।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। চিকিৎসা দিতে কিছুটা হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। গরমের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ে।

‘প্রতিনিয়ত মনিটর করা হচ্ছে। সাধ্যমতো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে রোগীর চাপ কমবে।’

এ বিভাগের আরো খবর